ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘কী করছি কেন করছি সেটা জানতে হবে’

মামুন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৩৩, ৭ মার্চ ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘কী করছি কেন করছি সেটা জানতে হবে’

বাংলাদেশ সোসাইটি ফর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (বিএসএইচআরএম) ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করার পর টানা ৫ বছর ধরে আন্তর্জাতিক মানবসম্পদ সম্মেলন করে চলেছে।

বিএসএইচআরএম- মেট লাইফ আন্তর্জাতিক এইচআর কনফারেন্স-২০১৬ শিরোনামে এবারও সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলন হবে আগামী ১১ মার্চ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। এ ব্যাপারে বিএসএইচআরএম-এর সাধারণ সম্পাদক, এবি ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্স ডিভিশনের প্রধান মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের মুখোমুখি হয় রাইজিংবিডি ডটকম। তিনি মানবসম্পদের উন্নয়ন ও সম্মেলন সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলেছেন রাইজিংবিডির সাথে। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাইজিংবিডি’র অর্থনৈতিক প্রতিবেদক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

রাইজিংবিডি: বিএসএইচআরএম সম্পর্কে বলুন।

নজরুল ইসলাম: বিএসএইচআরএম বাংলাদেশের মানবসম্পদ পেশাজীবীদের একমাত্র স্বীকৃত সংগঠন। বিএসএইচআরএম-এর মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হচ্ছে মানবসম্পদ পেশাজীবীদের পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং দেশের মানুষকে প্রকৃত অর্থে সম্পদে পরিণত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সভা, সেমিনারের আয়োজন করা। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর আন্তর্জাতিক মানবসম্পদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

রাইজিংবিডি: ১১ মার্চ অনুষ্ঠেয় সম্মেলন সম্পর্কে কিছু বলুন।

নজরুল ইসলাম: ‘এইচআর ট্রান্সফরমেশন ফর ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট’- এই স্লোগানকে সামনে রেখে ১৬ কোটি মানুষকে সম্পদে পরিণত করার স্বপ্ন নিয়ে  সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এখানে ২৫টি দেশের ১ হাজারের বেশি মানবসম্পদ বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। এ দেশে মানবসম্পদ সম্পর্কিত কাজে জড়িতরা বিভিন্ন সেশনে অংশ নিয়ে অনেক কিছু জানতে পারবেন।

রাইজিংবিডি: এই সম্মেলনের মাধ্যমে এদেশের মানুষ কীভাবে লাভবান হবেন?

নজরুল ইসলাম: ম্যাক্রো লেভেলে আমরা কাজ করছি। শ্রম মন্ত্রণালয় নয়, আমরা মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় চাই। আর সেভাবেই কাজ করছি। তার কারণ হচ্ছে, যখনই বিদেশে শ্রম যাচ্ছে তখন বলা হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক যাচ্ছে। আর মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় করা হলে আমরা পাঠাবো মানবসম্পদ। যারা ওইখানে গিয়ে সুপারভাইজার হবে, নেতৃত্ব দেবে। শ্রমিকদের আয়ে আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হতে যাচ্ছি কিন্তু এই শ্রমিকই যখন সুপারভাইজার পর্যায়ে যাবে তখন তাদের আয় দ্বিগুণ হয়ে যাবে।

তখন আমাদের জাতীয় আয়ের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে যাবে। এরকম বড় বড় স্বপ্ন নিয়ে আমরা কাজ করি। এই কনফারেন্সে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞরা অংশ নিচ্ছেন। যারা গুরু হিসেবে গণ্য তাদেরকেই আমরা আমন্ত্রণ জানাই। কারণ, আমাদের দেশে যারা মানবসম্পদের ওপর পড়ালেখা করেছেন বা এ সংশ্লিষ্ট পেশায় রয়েছেন তাদের পক্ষে বিদেশে গিয়ে এই রকম বড় বড় মানুষের গবেষণালব্ধ প্রতিবেদন শোনা সম্ভব না। এটা অনেক খরচের ব্যাপার, যা সবাই বহন করতে পারেন না। তাই আমরা বিশেষজ্ঞদের এই দেশে নিয়ে আসছি। আমাদের দেশের মানবগোষ্ঠীকে কীভাবে সম্পদে পরিণত করতে হবে সেই ধারণা যাতে তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায়, এই স্বপ্ন থেকে এই সম্মেলন।

রাইজিংবিডি: সম্মেলনে কি থাকছে?

নজরুল ইসলাম: একদিনের সম্মেলনে তিনটি কি-নোট সেশন থাকবে আর দুটো প্যানেল ডিসকাশন। এই সেশনে বিভিন্ন দেশের যারা বিশেষজ্ঞ রয়েছেন তাদের বলা হয়েছে বৈশ্বিক চাহিদার সঙ্গে তার দেশের সমস্যা, সম্ভাবনা ও এর থেকে উত্তোরণের উপায় তুলে ধরার। প্যানেল ডিসকাশনে ওই কি-নোটের বিশ্লেষণ থাকবে। আমাদের দেশের বিভিন্ন কোম্পানির সিইও বা মালিকরা এ থেকে তাদের প্রতিষ্ঠানের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করার ব্যাপারে জ্ঞান অর্জনে সক্ষম হবেন। উদ্যোক্তারা তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন করবেন। উত্তর জেনে নিয়ে নিজেদের কোম্পানির কর্মীদের মুখোমুখি হবেন।

রাইজিংবিডি: প্যানেল ডিসকাশনের বাইরে আর কি থাকবে?

নজরুল ইসলাম: এই সম্মেলনের মাধ্যমে বাছাই করে একজনকে মানবসম্পদে আজীবন সম্মননা পুরস্কার দেয়া হয়। যা গত দুই বছর দেয়া হয়েছে। একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, এই প্রথম বাংলাদেশে এশিয়া প্যাসিফিক ফেডারেশন অব হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের (এপিএফএইচআরএম) বোর্ড মিটিং হবে রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে। এর সভাপতি বাংলাদেশের মো: মোশাররফ হোসেন। তিনি বিএসএইচআরএম-এর সভাপতি। তাই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ১১ মার্চ হচ্ছে সম্মেলন আর ১২ মার্চ হচ্ছে বোর্ড সভা।

রাইজিংবিডি: সম্মেলনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ থাকবে কিনা?

নজরুল ইসলাম: আমাদের কাছে গ্রাম ও শহরের কোনো পার্থক্য নেই। আমরা সারা দেশেই প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়কে জানিয়েছি এবং আমাদের সম্মেলন সম্পর্কেও জানিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টারগুলোতে কথা বলেছি যে, আপনারা আপনাদের সম্ভাবনাময় ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠাতে পারবেন। মূল কথা হচ্ছে আমাদের কাছে পুরো মানবজাতীই একটি সম্পদ। আজকে পঞ্চগড়ের কোনো কলেজে লেখাপড়া করছে তার মধ্যেও সম্ভাবনা থাকতে পারে। সেও এই সম্মেলনে এসে বিশেষজ্ঞদের কথা শুনে তার মধ্যেও অনুপ্রেরণা জাগতে পারে।

রাইজিংবিডি: কীভাবে এই সম্মেলনে অংশ নিতে পারবে?

নজরুল ইসলাম: এখানে আসতে হলে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে অংশগ্রহণকারীকে রেজিস্ট্রেশন করে আসতে হবে। যেহেতু এটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন, এখানে পাশাপাশি বসার জায়গারও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সে কারণে এই ব্যবস্থা। এটা সবার জন্য উন্মুক্ত নয়, রেজিস্ট্রেশন করে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে এখানে অংশগ্রহণকারী হিসেবে আসতে হবে। কারণ, রেজিস্ট্রেশন করলে জায়গা সম্পর্কে আমাদের একটা ধারণা থাকবে।

রাইজিংবিডি: আমাদের বিশাল মানবগোষ্ঠী, এই সম্মেলনের মাধ্যমে এই বিশাল মানবগোষ্ঠীকে সম্পদে পরিণত করার কতটুকু সম্ভাবনা আছে?

নজরুল ইসলাম: শুধু এইরকম সম্মেলন দিয়ে সম্ভব না। সম্মেলনের পাশাপাশি আমরা আরো অনেকগুলো কাজ করছি। যেমন আমি ব্যক্তিগতভাবে আন্তর্জাতিক  শ্রমিক সংগঠনের (আইএলও) প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছি। তাদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কাজ করি। তাদের প্রশিক্ষণ দেই। এছাড়া ইউএনডিপি’র কিছু প্রকল্প রয়েছে। বিশেষ করে শিল্পকারখানা-বিশ্ববিদ্যালয় সহযোগিতা। দেখা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি পড়াচ্ছে আর শিল্পকারখানাগুলো কি চায় এই দুটির মধ্যে ফারাক রয়েছে। এটাকে কমানোর জন্য আমরা কাজ করছি। এমনিভাবে এই আমরা বিএসএইচআরএম- এ যারা যুক্ত রয়েছি তারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যাচ্ছি, তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। আপনি যখন ঘুমিয়ে থাকবেন তখনো যাতে উৎপাদনমুখী কিছু হয় সেটা বুঝাচ্ছি। কারণ, পৃথিবী থেমে থাকছে না। পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এমন একটি পরিবর্তনের মধ্যে আছি, যা সার্বক্ষণিক পরিবর্তন হচ্ছে। যার সাথে আমাদের খাপ খাওয়াতে হবে। না হয় আমরা পিছিয়ে যাবো। তাই সবাইকে সার্বক্ষণিক সতর্ক থাকতে হবে। সবকিছুর জন্য তাকে সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। তরুণদের নিয়ে আমরা অবশ্যই এগিয়ে যাবো।

রাইজিংবিডি: এর জন্য সরকারি কোনো সহায়তা চান কিনা?

নজরুল ইসলাম: সরকারের কাছে প্রথম যে দাবি, সরকার কোনো কিছু একা একা করতে পারবে না। আমরা যার যার জায়গা থেকে যতটুকু সম্ভব কাজ করবো। পাশাপাশি সরকারি নীতি নির্ধারণী একটা জায়গায় চলে আসা প্রয়োজন। যেটা আমরা দাবি করেছি, শ্রম মন্ত্রণালয় নয়, করতে হবে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়। পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই এই মন্ত্রণালয় রয়েছে। প্রতিবেশী ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া এবং ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশসহ বিশে^র প্রায় সকল উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশে পৃথক মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় আছে। যার মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়নের ওপর রাষ্ট্রীয়ভাবে গুরুত্ব ও পৃষ্ঠাপোষকতা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের জমি কমে যাচ্ছে, অন্য সম্পদও সীমিত। আমাদের একটাই সম্পদ রয়েছে, তা এই বিশাল মানবগোষ্ঠী। এই মানবগোষ্ঠীকে সম্পদে পরিণত করতে হবে। সরকারেরও সেখানে এমন একজন লোককে বসাতে হবে যিনি এই নীতিটা যথার্থভাবে পালন করতে পারেন। একটি টার্গেট নিয়ে পরিকল্পনা করে তা যথার্থভাবে বাস্তবায়ন করতে পারেন।

রাইজিংবিডি: বিশেষজ্ঞ কারা থাকছেন এই সম্মেলনে?

নজরুল ইসলাম: প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের  রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টেফেন্স ব্লম বার্নিকাট। অতিথি বক্তা থাকবেন অস্ট্রেলিয়ান হিউম্যান রিসোর্স ইনস্টিটিউটের সিইও লীন গুডিয়ার, ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব পিপল ম্যানেজমেন্ট এসোসিয়েশনের সদ্য বিদায়ী সভাপতি আরনেস্তো জি এস্পিনোসা, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ পারসোনাল ম্যানেজমেন্ট, ভারতের সভাপতি সোমেন দাসগুপ্তা, সিঙ্গাপুর হিউম্যান রিসোর্স ইনস্টিটিউটের সভাপতি এরমান টান, হংকং ইনস্টিটিউট অব হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট-এর  সভাপতি ডেভিড লী, জাপান সোসাইটি ফর এইচ আর ম্যানেজমেন্টের পরিচালক ইউজি মিসিরো, ইনস্টিটিউট অফ পারসোনাল ম্যানেজমেন্ট, শ্রালংঙ্কার সভাপতি রোহিতা আমারপালা, মালয়েশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের সভাপতি আরেসানদিরান জে এবং এশিয়া প্যাসিফিক ফেডারেশন ফর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ও বিএসএইচআরএম-এর সভাপতি মোঃ মোশাররফ হোসেন।

এছাড়া দেশ বিদেশের প্রায় একহাজার মানবসম্পদ পেশাজীবী অংশগ্রহণ করবেন।

রাইজিংবিডি: তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।

নজরুল ইসলাম: আমরা সম্ভাবনাময় মানবসম্পদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, তারা এই সম্মেলনে যোগদান করুক খুব মনোযোগ সহকারে এবং এর থেকে কিছু অর্জন করুক। সম্মেলনে এসে ষষ্ঠ ইন্দ্রীয় খোলা রাখতে হবে। কারণ, সব কিছু পরিবর্তনশীল। তাকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে; কি পরিবর্তন হলো এবং কেনো হলো- এগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। শেষ কথা হচ্ছে, নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকতে হবে। একজন মানুষ যখন পড়ালেখা করছে, কেন পড়ছে? সে সম্পর্কে বুঝতে হবে।

আসলে আমরা অনুকরণ ও অনুসরণ করে থাকি অর্থাৎ অন্যে এই বিষয়টি নিয়ে পড়ছে তাই আমাকেও একই বিষয় নিয়ে পড়তে হবে। মা-বাবা’র ইচ্ছে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে সন্তানের ওপর। অন্যের ইচ্ছা নয়, প্রত্যেক মানুষের নিজের একটি জায়গা প্রয়োজন। যেখানে সে নিজেকে প্রাধান্য দেবে। নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করবে। নিজেকে জানার চেষ্টা করবে। নিজের ভালো লাগা, মন্দ লাগাটা বেছে নেবে। আমরা কি করছি, কেন করছি সেটা জানতে হবে।

রাইজিংবিডি : সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

নজরুল ইসলাম: আপনাকেও ধন্যবাদ। আপনার মাধ্যমে রাইজিংবিডি পরিবারের সবাইকে ধন্যবাদ। আর রাইজিংবিডির মাধ্যমে এর পাঠক ও দেশের সম্পদ প্রতিটি মানুষকে ধন্যবাদ।  

 

 

 



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ মার্চ ২০১৬/মামুন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়