ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

টাকা কম দেওয়ায় অসুস্থ শিশুর মুখ থেকে খুলে নেওয়া হয় অক্সিজেন সাপোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:২৩, ৮ জানুয়ারি ২০২২   আপডেট: ২১:২৩, ৮ জানুয়ারি ২০২২
টাকা কম দেওয়ায় অসুস্থ শিশুর মুখ থেকে খুলে নেওয়া হয় অক্সিজেন সাপোর্ট

ঠান্ডাজনিত কারণে অসুস্থ দুই শিশুকে ৫ দিন চিকিৎসাসেবা দিয়ে ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা বিল দাবি করেছে রাজধানীর আমার বাংলাদেশ হসপিটাল। আর্থিক সংকট থাকায় হাসপাতালের মালিক গোলাম সারোয়ারের কাছে ৫০ হাজার ৫০০ টাকা জমা দেন শিশু দুটির মা আয়শা আক্তার। টাকা কম দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন গোলাম সারোয়ার। আর্থিক সংকটের কথা জানার পর চিকিৎসকরাও চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলা করেছেন। নার্সরা বিভিন্ন সময়ে অসুস্থ দুই শিশুর মুখ থেকে অক্সিজেন সাপোর্টও খুলে নিয়েছেন।

শনিবার (৮ জানুয়ারি) আমার বাংলাদেশ হসপিটালের মালিক গোলাম সারোয়ারকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে হাজির করে তার পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) সাইফুল ইসলাম। আবেদনপত্রে এসব কথা বলেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শুভ্রা চক্রবর্তী গোলাম সারোয়ারের দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, ঠান্ডাজনিত কারণে অসুস্থ আব্দুল্লাহ ও আহম্মেদকে গত ৩১ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে এক দালালের প্ররোচনায় আয়শা আক্তার তার অসুস্থ দুই সন্তানকে ২ জানুয়ারি আমার বাংলাদেশ হসপিটালে নিয়ে যান। হাসপাতালটির চিকিৎসকের পরামর্শে দুই শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করেন আয়শা। সেখানে শিশুদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আইসিইউতে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়। ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত দুই শিশুর চিকিৎসার বিল আসে মোট ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা। আর্থিক সমস্যার কারণে হাসপাতালের মালিক গোলাম সারোয়ারের কাছে ৫০ হাজার ৫০০ টাকা জমা দেন শিশু দুটির মা। টাকা কম দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন গোলাম সারোয়ার। হাসপাতালের বিল পরিশোধের অক্ষমতার কথা জানার পর চিকিৎসক ওই দুই শিশুর চিকিৎসায় অবহেলা করেন। নিয়মিত ওষুধ দেওয়া হয়নি শিশু দুটিকে। নার্সরা অসুস্থ দুই শিশুর মুখ থেকে বিভিন্ন সময়ে অক্সিজেন সাপোর্টও খুলে নেন। হাসপাতালের মালিক গোলাম সারোয়ার আয়শা আক্তারের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। দুই সন্তানসহ আয়শা আক্তারকে লাথি মারেন তিনি। এতে সন্তানসহ মেঝেতে পড়ে যান আয়শা। এ সময় শিশু আহম্মেদ গুরুতর আহত হয়। বিকেল ৪টার দিকে শিশু দুটিকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়। আয়শা আক্তার তার প্রবাসী স্বামীকে বিষয়টি জানালে তিনি ৪০ হাজার টাকা পাঠান। তারপরও শিশু দুটিকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে আব্দুল্লাহ ও আহাম্মেদকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আহম্মেদকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

এ ঘটনায় শুক্রবার মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন আয়শা আক্তার।

মামুন/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ