ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বগুড়ায় ওসির বিরুদ্ধে ধর্ষণের আলামত নষ্টের অভিযোগ

বগুড়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১০, ২৩ আগস্ট ২০২২   আপডেট: ১১:১৫, ২৩ আগস্ট ২০২২
বগুড়ায় ওসির বিরুদ্ধে ধর্ষণের আলামত নষ্টের অভিযোগ

বগুড়ার ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে ধর্ষণের আলামত নষ্টের অভিযোগ উঠেছে।

গত ২ আগস্ট ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা বগুড়ার পুলিশ সুপার বরাবর এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার তিন সদস‌্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। পরে মামলার তদন্তভার বগুড়া জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন:

ওই কিশোরীর মা অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার মেয়েকে ধর্ষণের বিষয়টি জানার পর তিনি ধুনট থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা। তদন্ত চলাকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি মুরাদুজ্জামান মুকুলকে গ্রেপ্তার করেন এবং তার কাছ থেকে ধর্ষণের ভিডিও, মোবাইল ফোন জব্দ করেন। এরপর তদন্তকারী কর্মকর্তা গত ১৪ মে তাকে ডেকে ধর্ষণের ভিডিওগুলো দেখান এবং তাকে জানান উদ্ধার হওয়া ভিডিওগুলো সিডি করে উদ্ধারকৃত ফোনের সঙ্গে সিআইডিতে পাঠানো হবে। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তা জব্দ তালিকায় এবং আলামত ফরেনসিকে পরীক্ষার জন্য পাঠানো তালিকায় উদ্ধার হওয়া ভিডিওর সিডি পাঠানোর বিষয় উল্লেখ না করে শুধু উদ্ধার হওয়া ২টি মোবাইল পাঠিয়েছেন। 

তিনি অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, পরবর্তীতে তিনি জানতে পেরেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা গত ১৯ মে শুধু ফোন দুটি পাঠিয়ে সব তথ্য ধ্বংস করেছেন। ফলে উক্ত ফোন দুটি থেকে কোনো ভিডিও পাওয়া যাবে না বলে তারা মনে করছেন। তদন্তকারী অফিসার টাকার বিনিময়ে আসামিকে রেহাই করার জন্য ভিডিও এর কথা চার্জশিটে উল্লেখ না করে দায়সারাভাবে চার্জশিট দাখিলের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন।

ওই কিশোরীর মা রাইজংবিডিকে বলেন, ফরেনসিকে আসামির মোবাইল থেকে পাওয়া ভিডিও সিডি আকারে এবং মোবাইলসহ পাঠানোর কথা ছিলো। কিন্তু শুধু মোবাইল ফোন ফরেনসিকে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে থানার ওসি কৃপা সিন্ধা বালার কাছে জানতে চাইলে ওসি বলেন, মোবাইলে আপনার মেয়ের কোনো ভিডিও ছিলো না। কিছু পাওয়া যায়নি। অথচ তিনি নিজে আমাদের ডেকে মোবাইল থেকে উদ্ধার হওয়া ভিডিও দেখিয়েছেন। সেখানে আমার মেয়ের সঙ্গে আসামি মুরাদের অশ্লীল ভিডিওর পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকজন মেয়ের সঙ্গে তার অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ছিলো।

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা ধর্ষণের আলামত নষ্টের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আসামির মোবাইলে কোনো ভিডিও পাওয়া যায়নি। আমরা তাৎক্ষণিক মোবাইল দেখেছি। সেখানে আসামির পারিবারিক ছবি ছিলো। সেই মোবাইল ফরেনসিকের জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে মামলার চার্জশিট হবে। মামলার বাদীদের পক্ষ থেকে এসপির কাছে অভিযোগ দিয়েছে। এরপর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তভার এখন ডিবিতে। আমরা গত ১৮ তারিখে ডিবিকে মামলা বুঝিয়ে দিয়েছি।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ জানান, একটা অভিযোগ হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে ব‌্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উল্লেখ্য, বগুড়ার ধুনটে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মুরাদুজ্জামান মুকুল নামের এক প্রভাষককে চলতি বছরের ১২ মে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মুরাদুজ্জামান মুকুল ধুনটের জালশুকা হাবিবুর রহমান কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ায় তাকে কলেজের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। 

এনাম আহমেদ/ইভা 

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়