ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মৌলবাদীরা বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছে: গয়েশ্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৪, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫  
মৌলবাদীরা বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছে: গয়েশ্বর

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

তিনি বলেন, “আপনারা যাদেরকে মৌলবাদী বলেন, আমি তাদের মৌলবাদী বলি। তারা এখন বেহেশতের টিকিট বিক্রি করতেছে। অর্থাৎ তাগো লগে থাকলে আপনি বেহেশতে যাবেন; আর তাগো লগে না থাকলে আপনি দোজখে যাইবেন। আর নিজেরা বেহেশতে যাইব কি না, সেই কথা তারা জানে না।”

আরো পড়ুন:

“সেজন্য আমি বলব, দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান হচ্ছে। আমরা ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি পাইছি। কিন্তু গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকে এখন সাম্প্রদায়িকতা, উগ্র উন্মাদনা সৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে, যেটার মধ্য দিয়ে মব তৈরি হয়।”

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। হিউম্যান রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘জুলাই বিপ্লব ও আগামীর গণতন্ত্র ভাবনা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা হয়।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “আমরা যদি গণতন্ত্রের পথে রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে না রাখতে পারি, তাহলে সাম্প্রদায়িকতা হবে ফ্যাসিবাদের চেয়ে দ্বিগুণ কঠিন এবং জনজীবন ধ্বংসের শেষ মাথায় নিয়ে যাবে। এই আধুনিক বিশ্বে মুক্ত চিন্তা, প্রতিভার বিকাশ এরা (সাম্প্রদায়িক শক্তি) হতে দেবেন না, ওরা করতে দেবে না।”

“বিএনপি ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাস করে। প্রত্যেকটা ধর্ম-যে যেই বিশ্বাসই করুক না কেন, ধর্ম কিন্তু মানুষকে সঠিক পরিচালিত করার জন্য একটা জীবন ব্যবস্থা। ধর্মে যেটা পাপ, আধুনিক রাষ্ট্র আইনে সেটা হলো অন্যায়। সেই অন্যায়ের বিচারের ধারার মধ্যে লেখা থাকে কোন অন্যায়ের জন্য কতটুক শাস্তি।”

“ঠিক আপনি পবিত্র কোরআন-গীতা পড়েন কোন পাপের জন্য মৃত্যুর পরে কার কী শাস্তি হবে, সেটাও কিন্তু লেখা আছে। সেই কারণে ধর্মের সাথে রাষ্ট্র ব্যবস্থার কোনো সাংঘর্ষিক ব্যাপার নাই।”

গয়েশ্বর বলেন, “হাসিনা সরকার ছিল ফ্যাসিবাদ, ভুইলা গেছে তো ফ্যাসিবাদ সরকার। এই সরকারটা কোন বাদ? সরকারের কোনো কাজকর্ম আছে, চোখে পড়ে? তিন-চারজন ছাড়া আর কেউ কোনো কথা বলে? মন্ত্রণালয় কেমনে চলে, কোন মন্ত্রণালয়ে কী হচ্ছে কোনো খবর রাখে? সরকারের সব চালাচ্ছে শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া সেই প্রশাসন।”

‘‘এখন এত জামায়াত, এত বিএনপি যদি সচিবালয় থাকে- তো হাসিনার সময়ে এরা থাকল কেমনে? ও (শেখ হাসিনার সরকার) তো প্রায়ই পোস্টমর্টাম করত, পোস্টমর্টাম করে করে বের করে দিতো তাই না।”

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, “আজকে যে এলাকায় সব বিএনপি, তাহলে আওয়ামী লীগ এতদিন ছিল কোথায়? কতগুলো মাধ্যমে দেখবেন টিকটক হাবিজাবির মধ্যে দেখবেন। আর মিডিয়া এমন স্বাধীন হয়েছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্বাধীনতা গণতন্ত্রের মধ্যে, কিন্তু দায়িত্ব মূলত একটা থাকবে। মিডিয়া স্বাধীনতা যা খুশি তাই বলব, যাকে খুশি তাকে বলব।”

“যেমন আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। আর সোশাল মিডিয়া এমন হইছে যে, আমার কথা আমি বলব, যাকে খুশি তাকে বলব, যা খুশি তাই বলব।”

“এগুলো শুনলে কান গরম হয়ে যায় এবং মানুষের মাথা নষ্ট করে দেবে…ছোট ছোট শিশু বাচ্চাদেরকে নানা ধরনের যে উপসর্গগুলো তৈরি করতেছে…একেবারে আমি অনেকগুলো কথা বলতে উচ্চারণ করতে পারব না.. এই স্বাধীনতা আমরা কোথায় দেব? বেহেস্তে না দোজখে দেব?”

হিউম্যান রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক আহমেদ হুসেইনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শহিদুল হক দেওয়ানের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, সাবেক ছাত্র নেতা মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়