ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে বিজয় দিবস উদযাপন

কূটনৈতিক প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০২, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২   আপডেট: ১১:০৬, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে বিজয় দিবস উদযাপন

যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসবমুখর পরিবেশে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন নিউইয়র্কে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারায় সম্পৃক্ত তরুণ বাংলাদেশি-আমেরিকানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রবাসী বাংলাদেশি নেতারা।

শনিবার স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানটি শুরু হয় সকাল সাড়ে দশটায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। আলোচনা পর্ব শুরুর আগে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্ম-উৎসর্গকারী বীর শহিদদের স্মরণে একমিনিট নিরবতা পালন ও তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। এরপর  উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশি-আমেরিকান নেতারা। তারা তাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্পসমূহের বাস্তবায়নে স্ব স্ব ক্ষেত্রে অবদান রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

আগত অতিথিদের আলোচনা শেষে সমাপনী বক্তব্য দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত। 

বক্তব্যের শুরুতেই তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতাসহ ১৫ আগস্টের শাহাদৎবরণকারী জাতির পিতার পরিবারের সব সদস্য, জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনসহ সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে রূপকল্প ২০২১, রুপকল্প ২০৪১ ও ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। ২০২১ সালে স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটাগরি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য আমরা জাতিসংঘের চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছি যা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের মর্যাদা ও সক্ষমতার স্বাক্ষর।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় ভূমিকার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, আমরা এখন শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন, বিশ্বশান্তি রক্ষা, শান্তি-বিনির্মাণ, দারিদ্র্য দূরীকরণ বিষয়ক আলোচনা ও নারীর ক্ষমতায়নসহ অসংখ্য বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশ নেতৃত্বশীল ভূমিকা রেখে চলেছে মর্মে উল্লেখ করেন তিনি।

স্থায়ী প্রতিনিধি আরও বলেন, আমরা আজ বিশ্বের ৪১তম অর্থনীতির দেশ। আশা করা যায়, ২০৩৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশ বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। কোভিড ব্যবস্থাপনা ও অব্যাহত অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশ্বের কাছে আজ রোল মডেল বাংলাদেশ।

প্রবাসী বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অগ্রণী ভূমিকা বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করছে। নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকানরা এখানকার মূলধারার রাজনীতিতে নেতৃত্বশীল ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। এখানকার প্রবাসী ভাই-বোনেরা নিয়মিত রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী রাখতে সহায়তা করছেন। জাতির পিতা ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের মধ্যে যারা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, তাদের দেশের ফিরিয়ে বিচারের আওতায় আনতে মিশনের উদ্যোগে প্রবাসীদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

আলোচনা পর্ব শেষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক রথীন্দ্রনাথ রায় এবং শহীদ হাসান। নৃত্যগীতি পরিবেশন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পারফর্মিং আর্টস-এর একদল নৃত্যশিল্পী। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকার আহ্বায়ক মিথুন আহমেদ এর কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে শেষ হয় সাংস্কৃতিক পর্ব।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কেক কেটে অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

/হাসান/সাইফ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়