ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ছোটগল্প || বঙ্গবন্ধুকে চিঠি

মোজাফ্‌ফর হোসেন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৬, ১১ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ১৫:৫৭, ১১ আগস্ট ২০২১
ছোটগল্প || বঙ্গবন্ধুকে চিঠি

করিম চাচা ফিরে এলেন ১০ জানুয়ারি। আমরা তখন বেতারে কান দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের খবর শুনছি। দুপুরে বঙ্গবন্ধু ঢাকা এলেন। করিম চাচা কখন গ্রামে এসেছেন আমরা জানি না। সন্ধ্যায় কেউ একজন টের পেল গ্রামের শেষ বাড়িটায় হারিকেন জ্বলেছে। গ্রাম বলতে এদিক-সেদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে শ খানেক বাড়ি হবে। এমনিতেই ঘরের দেয়াল ওঠে তো ছন খসে যায়, মেঝে ঠিক করতে করতে টিন উড়ে যায় দমকা বাতাসে, তার ওপর ন’ মাসের যুদ্ধে গাঁটার হতচ্ছাড়া অবস্থা- কে কার বাড়ি দেখে! ফলে আমরা আর সেই সন্ধ্যায় হঠাৎ জ্বলে ওঠা আলোটুকুর খোঁজ নিতে যাই না।

পরদিন সকালেও ভুলে যাই গ্রামের শেষ বাড়িটায় বহুদিন পর আলো জ্বলে ওঠার কথা। আমাদের স্কুল নেই, লেখাপড়া নেই, একবেলা যে দুটো ভাত জোটে তাই পেটে ফেলে মাঠময় ছুটে বেড়াই। ক’দিন আগেও এ মাঠে দৌড়ানো তো দূরের কথা হাঁটতেও পারিনি। পা টিপে টিপে রাতের অন্ধকারে বদনা হাতে যেটুকু না গেলেই না। ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তান আর্মির পুঁতে রাখা মাইনগুলো তুলে ফেলার পর এখন আমরা প্রাণখুলে ছুটতে পারি। তখন মাইন পোতা থাকলেও আজ মনে হয় সমস্যা ওখানে ছিল না, আমাদের পা-জোড়াই যেন বাঁধা ছিল, আমরা জন্মেছি পা বাঁধা অবস্থাতেই; কিন্তু হঠাৎ কোনো এক জাদুকর এসে খুলে দিয়েছে শিকল। ফের যাতে কেউ না বেঁধে ফেলতে পারে এই ভয়ে আমাদের ছোটাতে কোনো ক্লান্তি আসে না।

পশ্চিমে দম বন্ধ করে পাঁচ মিনিট দৌঁড়ালে ভারতের সীমান্ত। সীমান্তের পাশে প্রবাহমান খালের ওপর পেটে পেট, পিঠে পিঠ ঠেকিয়ে কোনোমতে দাঁড়িয়ে আছে ছন্নছাড়া এই গ্রামটা। বছর বছর খালটির খামখেয়ালি চলনের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে গেছে গ্রামটির ভূগোল। দু’পুরুষ আগের কেউ কেউ বলে গেছেন খালের ওপারেই ছিল বসতি। পানির সঙ্গে গড়াতে গড়াতে দেশটাই বদলে গেছে। এখন ওপর থেকে দেখলে মনে হবে, কঁচি হাতে আঁকা একটি নদী-গ্রাম। সাপের মতো মেরুদণ্ডহীন লিকলিকে দেহ নিয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে, গ্রামটিও অতি উৎসাহের সঙ্গে বাঁকে বাঁক মিলিয়ে খানিকটা পথ হেঁটে পিছুটান মেরেছে। উত্তর-দক্ষিণে নিরন্তর মাঠ। যতদূর চোখ যায় ধানী জমি। পূবে মেহেরপুর শহর।

আমরা যখন দৌড়াতে দৌড়াতে ক্লান্ত হয়ে করিম চাচার উঠোনে বসেছিলাম। ভুলেই গিয়েছিলাম আগের দিন সন্ধ্যায় আমরা এই ঘরে বহুদিন পর আলো জ্বলতে দেখেছি। আমাদের মনে পড়ে যাওয়ার আগেই করিম চাচা ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। গ্রামের সবচেয়ে বয়স্ক লোকটি মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে এসেছেন দেশ স্বাধীন হওয়ার চব্বিশ দিন পরে। ১ ডিসেম্বর থেকে মেহেরপুর মুক্ত হতে শুরু হলেও সীমান্তে পাকিস্তানি বাহিনীর পুঁতে রাখা অসংখ্য মাইন অপসারণের পর ৬ ডিসেম্বর এলাকাটি সম্পূর্ণভাবে হানাদারমুক্ত হয়। তাই আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষীত হওয়ার আগেই আমাদের গ্রাম থেকে যারা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন, তারা ফিরে আসেন। যারা আসেননি তাদের আমরা শহিদ বলে ধরে নেই। যখন যিনি এসেছেন আমরা ছুটে গেছি তার কাছে মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনতে। যুদ্ধের সময় সীমান্তের ওপারে শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়ার কারণে মুক্তিযুদ্ধের দুঃসাহসিক অভিযানের অনেক কথা আমাদের তখন অজানা। একজন একজন করে ফেরার সংবাদ আসে আর আমরা ছুটে যাই। তাদের বাড়ির সামনে বসে থাকি ঘণ্টার পর ঘণ্টা যুদ্ধের গল্প শুনবো বলে। শিহরণ জাগানো সে সব কাহিনি আমরা শুনি আর মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি যুদ্ধফেরত সৈনিকের দিকে। ক’দিন আগেও আমরা যাকে মামা-ভাই-চাচা-বোন বলে ডেকেছি তাদের খুব অচেনা মনে হয় তখন। মনে হয় যেন সিনেমায় আমরা গল্প শুনছি কোনো নায়কের। শ্রোতা হিসেবে আমরাও তখন সেই সিনেমার চরিত্র হয়ে উঠতে পেরে গর্ববোধ করি।

কিন্তু আজ যখন যুদ্ধফেরত বৃদ্ধসৈনিক করিম চাচাকে দেখি তখন আর আমরা ছুটে যাই না। তাকে কোনো সিনেমার নায়ক ভেবে শিহরিত হই না। যুদ্ধ থেকে মাত্র ক’টা দিন দেরি করে ফেরাতে আমাদের সব গল্প যেন শেষ হয়ে যায়। করিম চাচা আমাদের ডাকেন; একদিন না, প্রায়ই। যখনই কাছে-দূরে দেখেন, ইশারা করেন। আমরা কখনো যাই, কখনো যাই না। তিনি তার যুদ্ধদিনের গল্পগুলো বলেন, আমরা কখনো শুনি, কখনো শুনি না। করিম চাচার সব গল্পই আমাদের শোনা মনে হয়। চাচা মুক্তিযুদ্ধের সময় বগুড়া-দিনাজপুর অঞ্চলে বিভিন্ন ক্যাম্পে ছিলেন। পাকিস্তানি বাহিনী মেহেরপুরে প্রবেশ করে ১৮ই এপ্রিল। করিম চাচা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলে রান্না করতেন। ওখান থেকেই যুদ্ধে চলে গেছেন তার আগেই। বিভিন্ন ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে দিতেন বলে জেনেছি। যার হাতে অস্ত্র ছিল না, তার গল্প আমাদের তখন টানে না। আমরা পালিয়ে বেড়াই করিম চাচার গল্প থেকে। 
কিন্তু একটা গল্প কতগুলো মানুষকে ঠিকই টেনে নেয় তার কাছে।

১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু সংসদীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করলেন। তিনি যেদিন বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা- এ সকল বিশ্বাসের কথা বললেন, ঠিক সেদিনই গ্রামে ফিরে এলেন মতুবিল্লাহ হুজুর দিনের নতুন দাওয়াত নিয়ে। সঙ্গে  ক‘জন অচেনা যুবক। রাতারাতি সহী হাদিসের কথা শুনিয়ে গ্রামের প্রভাবশালী মানুষগুলোকে আহলে হাদিসে রূপান্তর করে নিলেন। আমার যুদ্ধফেরত বাবাও গেলেন সে দলে সহী দিনের কথা ভেবে। আমরা গেলাম মতুবিল্লাহর কাছে, মুক্তিযুদ্ধের মুখরোচক গল্প শুনতে। পাকিস্তানি সৈন্যদের সঙ্গে রাতদিন থেকে তিনি কিভাবে দেশের উপকার করেছেন তার ব্যাখ্যা দিতে উদ্ভট উদ্ভট সব দুঃসাহসিক অভিযানের গল্প শোনাতেন আমাদের। আমরা গ্রামের অল্পবয়সীরা মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ইতিহাসের ছাত্র হয়ে উঠেছিলাম রাতারাতি।

করিম চাচার কাছে তখনও কেউ যায়নি। বয়সের ভারে তিনি যখন ন্যূজপ্রায়, যে গল্প না বলতে বলতে মরচে পড়েছে তখনই সেই গল্পের সূত্রধরে কয়েক ঘর মানুষ গিয়ে দাঁড়ায় তার উঠোনে এক আকাশ অন্ধকার পেছনে ফেলে। সামনে দাউ দাউ করে জ্বলছে ক’টা ঘর। মালোপাড়া পুড়ে শেষ। মতুবিল্লাহর নির্দেশে মুখোশধারীরা আগুন দিয়েছে। মালোদের দেশ এটা না, ওদের ওপারে চলে যেতে হবে। সহী মুসলমানদের গ্রামে ওরা থাকলে আল্লাহর রহমত আসবে না, মানুষজন দ্বিন ভুলে কাফেরদের অনুসরণ করবে, এক জুম্মার খুতবায় এমনটাই বললেন মুতুবিল্লাহ হুজুর। সেই ঘরপোড়া মানুষগুলো দাঁড়িয়েছে করিম চাচার উঠোনে হারিয়ে যাওয়া একটা গল্প নিয়ে। তারা তখন মনে করিয়ে দেয় যে গল্প আমাদের মনে ছিল না, যে গল্প না বলতে বলতে ভুলে গেছেন গল্পকার স্বয়ং। তারা রাতের অন্ধকারে উন্মোচন করে অন্য এক সত্যের।

এক বুক আশা নিয়ে মালোপাড়ার লোকজন করিম চাচাকে বলে, চাচা একখান পত্র লিখবা তোমার ছেলেকে? হেই এখন মা-বাপ আমাদের। ঘরবাড়ি কিছুই থাকল না। বাপদাদার দ্যাশটা থাকব না? 
আমরা তখন করিম চাচার সন্তানের কথা স্মরণ করার চেষ্টা করি। আমরা যখন ভাবতে ভাবতে হয়রান হয়ে পড়ি তখনই আমাদের মনে পড়ে করিম চাচার নিঃসন্তান স্ত্রীর কথা। মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য একাত্তরে কোনো এক মধ্যদুপুরে মতুবিল্লাহ লোকজনসহ তাকে তুলে নিয়ে যায় পাকিস্তানি ক্যাম্পে। ওমন বুড়ো মানুষকে ক্যাম্পে নিয়ে কি করবে সেটা নিয়ে আমরা তখন বিস্ময় প্রকাশ করেছি, কারণ আমরা অতি অল্পবয়সেই জেনে গিয়েছিলাম ক্যাম্পে নারীদের নিয়ে কী কী করা হয়। আমরা বুঝে গিয়েছিলাম শুকনো শরীরের এক বৃদ্ধ নারীকে ওসবে প্রয়োজন হবে না। কিন্তু আমাদের সব জানা ঠিক ছিল না। করিম চাচার সন্তানের সন্ধানে গিয়ে আমাদের সেকথা আজ মনে পড়ে।

মালোপাড়ার লোকজন তখন করিম চাচাকে মনে করিয়ে দেয় বঙ্গবন্ধুর কথা। দেশের প্রধানমন্ত্রীর কথা। আমাদের বড়রা তখন মনে করতে পারে চাচা কয়েক বছর আগে গ্রামে এলে এক তরুণ নেতার গল্প শোনাতেন। নেতাকে চাচা ‘বাজান’ বলে ডাকতেন, নেতাও চাচাকে প্রতিউত্তর দিতেন চাচাজান ডেকে। এই গ্রামে একটাই গল্প ছিল তখনকার ছেলেবুড়োদের জন্য। করিম চাচা মাঝেমধ্যে এসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া সেই নেতার গল্প শুনিয়ে চলে যেতেন। বলতেন, আমার ছেলে এক মহান নেতা। ও একদিন গরিবের মুখে হাসি ফোটাবে। এসএম হলের সেই নেতা আজ দেশের প্রধানমন্ত্রী। মালো পাড়ার ঘরগুলো ছাই করে আগুন যখন শান্ত হয় তখন এই গল্পটা বাতাসে ফুঁসে ওঠে।

লিখব যা। করিম চাচা বলেন। মালোপাড়ার লোকগুলো কেউ কেউ বুকে আশা বেঁধে পড়ে থাকে, কেউ কেউ সরে যায় সীমান্তের ওপাশে। খালের এপার-ওপার হয় ওদের জীবন। মাত্র ক’কদম পায়ের দূরত্বে ওদের আত্মপরিচয় বদলে গিয়ে নতুন কোনো আত্মপরিচয় তৈরি হয় না। ওরা পড়ে থাকে নো ম্যানস ল্যান্ডে।

করিম চাচা লিখব লিখব করে কিছুই যখন লেখেন না তখনই আবার নতুন কথা লেখার আবদার নিয়ে হাজির হন জনাদশেক বাউল। দক্ষিণ মাঠের মধ্যকার আকড়াটা ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বাউল সুফিদের কাজকারবার শরিয়া-পরিপন্থী। মেহেরপুর-কুষ্টিয়া বাউলদের অঞ্চল। এই নাপাকি অঞ্চল পাক করতে হবে বলে গ্রামের মানুষকে আহ্বান জানালেন মতুবিল্লাহ হুজুর। বাউলরা ভিটেছাড়া হয়ে দাঁড়ালেন করিম চাচার উঠোনে। পত্র একটা লিখতে হবে পুত্রকে, দেশের প্রধানমন্ত্রীকে। করিম চাচা এমনই বৃদ্ধ যে কোনো কিছুকেই না বলার সামর্থ খুঁজে পান না। তিনি লিখবেন বলে চুপ করে বসে থাকেন উঠোনে। ওপাশে একটা মাথাভাঙা পেঁপেগাছ, এপাশে চাচা।

কোনো দিক থেকে কোনো সাড়াশব্দ আসে না। উপস্থিত লোকজনও আর কোনো কথা বাড়ায় না। আমরা পায়ের কাছে বসে থাকি একটা গল্প শুনবো বলে, এসএম হলের সেই পুরানো গল্পটা। গল্পগুলো না শুনতে শুনতে জমে গেছে চাচার শুকনো চোখের কোটরে। আমরা পড়ে নিতে পারি আবার পারি না। আমরা ফের যাই। 
করিম চাচা, এসএম হলের গল্পটা মনে পড়ে?  
করিম চাচা কোনো উত্তর দেন না। 
সেই তরুণ নেতার কথা মনে পড়ে?   
চাচা কোনো উত্তর দেন না।
লিখবে নাকি প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের কথা?
চাচা কোনো উত্তর দেন না।
আমরা ফিরে আসি বসে থেকে থেকে।

করিম চাচার কাছে ফের যাই দলেদলে। অন্য গল্পের সাক্ষী হয়ে। কতগুলো ঘোমটা দেওয়া মেয়েমানুষ গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে উঠোনে। কতগুলো অচেনা পুরুষমানুষ আসে ভিনগাঁ থেকে। একটা শুকনো হাড্ডিসার শরীর এসে দাঁড়িয়ে থাকে ঠায়, নারী না পুরুষ বোঝা যায় না। পত্র লিখতে হবে বঙ্গবন্ধুকে। দেশের প্রধানমন্ত্রীকে।

করিম চাচা আজ সকাল সকাল ওঠেন। আমরা বসে থাকি উঠোনজুড়ে। তখনও সূর্যের আলোটা তেতে ওঠেনি। তিনি এক বান্ডিল কাগজ নিয়ে বের হয়ে আসেন ঘর থেকে। একগুচ্ছ কাগজের ভার সহ্য করার মতো বয়সটাও তার আর নেই। তিনি উঠোনে বসে কাগজগুলো দড়ি দিয়ে বাঁধেন। আমরা উঠে দাঁড়াই পাশে। ছোটবড়ো অক্ষরে, কোথাও কোথাও কলমের নিব ছুঁয়ে যায়নি, সমস্ত কাগজ লেখা। কিছু বুঝতে পারি, কিছু পারি না। আমরা হাত লাগাই বাঁধার কাজে। কোনো একটা কাগজ ছুটে গেলে আমাদের কথা বাদ পড়ে যাবে ভেবে সাবধানী হই। সবগুলো কাগজ বাঁধা হলে করিম চাচা অনেক কষ্ট করে বলেন, পোস্ট অফিসে ফেলে দিয়ে আয়। এমন করে গুণে গুণে বলেন শব্দগুলো যেন প্রতিটা শব্দ টাকা দিয়ে কেনা তার।  
ঠিকানা কই চাচা? আমরা বলি। 

চাচা তখন ভেতর যান, কচ্ছপের গতিতে তার চলা আমাদের ধৈর্য্যহীন করে তোলে। আমরা আবার বলি, ঠিকানা কই চাচা? 
কলমটা হাতে নিয়ে চাচা আসেন। একটা সাদা কাগজে বানান করে করে লেখেন:
প্রেরক
করিম চাচা
খালপাড়া, মেহেরপুর।

প্রাপক
মুজিব বাজান
প্রধানমন্ত্রী, ঢাকা, বাংলাদেশ। 

তারিখটা দেবে না চাচা? আমাদের পেছন থেকে কেউ একজন মনে করিয়ে দেয়। 

চাচা কাগজের ডান দিকে উপরে বড় বড় করে লেখেন:
১৫ই আগস্ট, ১৯৭৫।

আমরা সঙ্গে সঙ্গে ছুট দিই পোস্ট অফিসের দিকে। চিঠিটা ঠিকমতো পৌঁছাতে হবে বঙ্গবন্ধুকে। 

ঢাকা/তারা

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়