ভৈরব তীরের সহস্রাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাট শহরের ভৈরব নদের তীরে গড়ে ওঠা সহস্রাধিক অবৈধ স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে দড়াটানা সেতুর নিচ থেকে বুলডোজার দিয়ে ভৈরব নদের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।
ভৈরব নদকে বাঁচাতে জেলা প্রশাসনের ৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
ভৈরব নদের তীরে অবৈধ দখলদারদের দৌরাত্ম বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের নজরে আসলে তারা এই অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়।
সরজমিনে দেখা যায়, নদের তীরের প্রধান বাজার, নাগেরবাজার, সুপারিপট্টি খেয়াঘাট, কেবি মাছ বাজার, লঞ্চঘাট, লোকালবোর্ড ঘাট, পুরাতন বাজার, মুণিগঞ্জ ও হাড়িখালি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বাঁশ খুটি দিয়ে অসংখ্য ঘর তৈরী করা হয়েছে। কোথাও কোথাও নদীর অংশে মাটি ফেলে উচুঁ করে স্থাপনা তৈরী করা হয়েছে।
এসব ঘরে বসে তারা ব্যবসা করে আসছেন। আজ সকাল ১০টার দিকে দড়াটানা সেতুর নিচ থেকে বুলডোজার দিয়ে স্থাপনা ভাঙার কাজ শুরু করে প্রশাসন। উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে ২০১৪ সালে ভৈরব নদের তীরে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন। এরকিছুদিন যেতে না যেতেই আবারও ময়লা ফেলে নদী দূষণ ও দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে উঠতে শুরু করে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, বাগেরহাট শহরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভৈরব নদের দড়াটানা থেকে মুণিগঞ্জ এলাকা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার জায়গায় অসংখ্য স্থাপনা গড়ে ওঠে। এসব এলাকায় কতিপয় ব্যক্তি নদের জেগে ওঠা চর এবং বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলে দখল করে রেখেছে। দখলের চিত্র সম্প্রতি প্রশাসনের নজরে আসে। তাই এসব অবৈধ দখলদারদের সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাগেরহাট পৌরসভা আমাদের এই উদ্যোগের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদের তীর রক্ষা ও দূষণ রোধে এখন থেকে নিয়মিতভাবে জেলা প্রশাসন মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাজারের একাধিক বাসিন্দা বলেন, জোয়ার ভাটা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ভৈরব নদ দিন দিন তার জৌলুস হারাচ্ছে। বেশ কিছু জায়গায় চর জেগেছে। এ ছাড়া বাজারের অনেক বাসিন্দা নদে ময়লা আবর্জনা ফেলে ভরাট করছে। পরে তারা সেখানে মাটি ফেলে উচুঁ করে স্থাপনা গড়ে তুলেছে। প্রশাসনের ঠিকমত নজরদারি না থাকায় অন্যরাও সে সুযোগ নিয়েছে। প্রশাসন ও পৌরসভার এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে সামনে যাতে আর কেউ এই সুযোগ না নিতে পারে তার জন্য সংশ্লিষ্টদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। তাহলেই দখল রোধ হবে বলে মনে করেন তারা।
বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান বলেন, ভৈরব নদ আমাদের ঐতিহ্য। এটা রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। এই নদের যেসব এলাকায় অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে তা ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
রাইজিংবিডি/বাগেরহাট/১১ এপ্রিল ২০১৭/আলী আকবর টুটুল/রুহুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন