ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৮ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

চলে গেলেন সুরকার খাদেমুল ইসলাম বসুনিয়া

নজরুল মৃধা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫৬, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চলে গেলেন সুরকার খাদেমুল ইসলাম বসুনিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর : স্বাধীন বাংলা বেতারের “আমার এ দেশ সব মানুষের, সব মানুষের। চাষাদের, মুটেদের, মজুরের” কালজয়ী এই গানের সুরকার ও সংগীত পরিচালক খাদেমুল ইসলাম বসুনিয়া আর নেই।

বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।

তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ২১ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

গুণী এই সংগীতশিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তার মরদেহ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে নিয়ে আসা হয়। এখানে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাদ জোহর দ্বিতীয় জানাজা গুপ্তপাড়াস্থ জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। এরপর নূরপুর কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

১৯৬৭ সালে ২৫ ডিসেম্বর রংপুর বেতার কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়। ওই দিন খাদেমুল ইসলাম বসুনিয়া প্রথম সংগীত পরিচালক হিসেবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংগীত পরিচালনা করেন। খাদেমুল ইসলাম বসুনিয়া মূলত একজন গণসংগীতশিল্পী ও সুরকার। এ ছাড়াও গীতিকার ও সংগীত প্রযোজক হিসেবে বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে তার অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি ১৯৬৭ সালে রংপুর বেতার কেন্দ্রে একজন নৈমিত্তিক সংগীত প্রযোজক হিসেবে যোগদান করেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশে গণআন্দোলন শুরু হলে খাদেমুল ইসলাম বসুনিয়া সাংস্কৃতিক কর্মীদের সমন্বয়ে রংপুর অঞ্চলে ব্যাপক সাংস্কৃতিক কার্যক্রম গ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সালে বেতারে নিজস্ব সংগীত প্রযোজক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং ১৯৯৩ সালে পদোন্নতি পেয়ে রাজশাহী বেতারে মুখ্য সংগীত প্রযোজক হন। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ বেতারের প্রিন্সিপাল মিউজিক প্রডিউসার পদে পদোন্নতি পান এবং ২০০১ সালে অবসর গ্রহণ করেন। তবে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বেতারের ‘ক’ বিশেষ শ্রেণির সংগীত শিল্পী হিসেবে নিবেদিত ছিলেন।

খাদেমুল ইসলাম বসুনিয়া দেশের বরেণ্য কবি শামসুর রাহমানের “দাউদাউ পুড়ে যাচ্ছে” আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর “কুমড়ো ফুলে ফুলে” ফজল শাহাবুদ্দিনের “বাংলাদেশের যত নদী” মাহফুজ উল্লাহর “শহীদের স্মৃতি জল” কবিতা থেকে গণসংগীতের সুরারোপ করে বিশেষভাবে প্রশংসিত হন। ১৯৭১ সালের অগ্নিঝরা দিনগুলোতে তার সুর করা “চাষাদের মুটেদের ছোটদের বড়দের সকলের” গানটি রথীন্দ্রনাথ রায়ের কণ্ঠে স্বাধীন বাংলা বেতার থেকে প্রচার হলে লাখো লাখো মুক্তিকামী বাঙালিকে অনুপ্রাণিত করে।

 

 

রাইজিংবিডি/রংপুর/২৮ ডিসেম্বর ২০১৭/নজরুল মৃধা/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়