ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

থমকে আছে ঢাকা-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের চার লেন

মাদারীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৬, ৩ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১২:০৮, ৩ জুলাই ২০২১
থমকে আছে ঢাকা-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের চার লেন

ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় থমকে আছে ঢাকা-মাদারীপুর বরিশাল মহাসড়কের চার লেনে উন্নতি করণ কাজ। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটি চার লেনে উন্নতিকরণ করা হলে কমবে দুর্ঘটনা। উন্নত হবে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান। কিন্ত দীর্ঘ দিনেও এর ভূমি অধিগ্রহণ কাজই শেষ হয়নি।

তবে এসব জটিলতার কথা অস্বীকার করেছেন জেলা প্রশাসক ড.রহিমা খাতুন। তিনি জানালেন ভূমি অধিগ্রহণের জন্য যৌথ তদন্ত শুরু হয়েছে।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের প্রথম ধাপে নির্মিত হয়েছে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৬১ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ে। চার লেনের সঙ্গে এ সড়কে যোগ হয় ধীরগতির যানবাহন চলাচলে দু’পাশে দুটি সার্ভিস লেন। কিন্তু দীর্ঘ এ সড়কের ফরিদপুর ভাঙ্গার মোড় থেকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর-মাদারীপুরের রাজৈর, সদর উপজেলা ও কালকিনি উপজেলা হয়ে পটুয়াখালীর পর্যটন এলাকা কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়কের পুরোটাই সরু এবং বিভাজক না থাকায় ঘটছে অহরহ দুর্ঘটনা।

অন্যদিকে এ কারণে ধীর হয়ে যায় যানবাহনের গতি। ফলে এ সড়ক পাড়ি দিয়ে কুয়াকাটা পৌঁছতে দীর্ঘ সময় লাগে।

এ সমস্যার সমাধান এবং পদ্মা সেতুর সুফল পেতে ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত আধুনিক সড়ক নির্মাণের জন্য উদ্যোগ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে অনুযায়ী ২০১৬ সালের শেষের দিকে শুরু হয় সড়ক নির্মাণে সমীক্ষার কাজ। ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর একনেকে অনুমোদন পায় এই প্রকল্পটি। এই প্রকল্পে শুধু জমি অধিগ্রহণের জন্য ১ হাজার ৮৬৭ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা অনুমোদন দিয়েছিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ ‘একনেক’। ২০২০ সালে ৩০ জুনের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ শেষ করার নির্দেশনা ছিলো। কিন্তু নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলেও জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়নি।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ভূমি অধিগ্রহণ শেষে সড়ক বিভাগকে জমি বুঝিয়ে দিলেই তারা টেন্ডার প্রক্রিয়ার পর সড়কের নির্মাণ কাজ করতে পারবে। তবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শেষ না হওয়াতে থমকে আছে সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। এই মহাসড়কটির কাজ শেষ হলে এই অঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রারমান উন্নত হবে। কমবে দুর্ঘটনা, পণ্য পরিবহন করা সহজ হবে।

কুয়াকাটা থেকে মাছ বোঝাই করে আসা ঢাকাগামী ট্রাকের চালক মহিউদ্দিন বেপারী জানালেন, কুয়াকাটা হয়ে বরিশাল থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৪ লেন হয়ে গেলে, আমরা খুব সহজে কম সময়ে গাড়ি চালাতে পারবো। এতে দুর্ঘটনাও কমে যাবে। একই কথা বললেন, আরো বেশ কয়েকজন গাড়ি চালক।

মাদারীপুর সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি ফায়জুল শরীফও বললেন, মহাসড়কটি দ্রুত ৪ লেন করা হলে সড়ক দুর্ঘটনা একদমই কমে যাবে।

মাদারীপুর সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য এম.আর. মুর্তজা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই শুনে আসছি, ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কটি চার লেন হবে। কিন্তু এখনো মহাসড়কটি উন্নতিকরণের তেমন দৃশ্যমান অগ্রগতি চোখে পড়েনি।

মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ভূমি অধিগ্রহণে একটু সময় বেশি লাগে তাই ভূমি অধিগ্রহণের জন্য আলাদা ডিপিপি প্রনয়ণ করা হয়েছে এবং ডিজাইন প্রনয়ণের কাজ চলছে। তবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে যত দ্রুত ভূমি অধিগ্রহণ করা শেষ হবে, ততো দ্রুত ৪ লেনের কাজ শুরু হবে।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের জন্য যৌথ তদন্ত শুরু হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ কাজ শেষ হলেই পরবর্তী কাজ শুরু হবে। ভূমি অধিগ্রহণ একটি সময় সাপেক্ষ কাজ বলেও জানালেন তিনি।

বেলাল রিজভী/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়