ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

রংপুরে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের সংকট 

রংপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৮, ২৮ জুলাই ২০২১  
রংপুরে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের সংকট 

করোনা সংক্রমণের কারণে রংপুর অঞ্চলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। শহরের তুলনায় গ্রামীণ হাট-বাজারে ফার্মেসিতে পাওয়া যাচ্ছে না এসব ওষুধ।

জ্বর কিংবা সর্দি হলে চিকিৎসকের পরামর্শপত্র না নিয়ে অধিকাংশ রোগী প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ফার্মেসিতে ছুটে যাচ্ছেন। তারা খুঁজছেন প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ। কিন্তু বেশি দামেও মিলছে না এসব ওষুধ।

বুধবার (২৮ জুলাই) রংপুর নগরীর আজিজ সুপার মার্কেটসহ বেশ কিছু ওষুধের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেট, এইচপ্লাস বা নাপা সিরাপের সংকট রয়েছে। কোথাও কোথাও বিকল্প কোম্পানির এই জাতীয় ওষুধ পাওয়া গেলে কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে।

বাচ্চার জ্বরের জন্য নগরীর আজিজ সুপার মার্কেটে নাপা সিরাপ কিনতে আসা রাহাদ হোসেন বলেন, করোনার এই সময়ে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। গত রাত থেকে সাড়ে তিন বছরের মেয়ের জ্বর। আজ নাপা সিরাপ কিনতে এলে দোকানি বলছেন সাপ্লাই নেই। আর বিকল্প ওষুধ খেয়েও কাজ হবে না। দেশের এই মহামারিকালে সাধারণ সর্দি, জ্বরের ওষুধেও যদি সঙ্কট হয়, তবে বিষয়টা দুঃখজনক।

জ্বর, মাথা ব্যথার জন্য এইচপ্লাস ও নাপা এক্সট্রারা ট্যাবলেট কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রামের বাজারের কয়েকটি ফার্মেমিতে ঘুরেও এই ওষুধ পাওয়া যায়নি। তাই শহরে এসেছি। এখানেও শুনি সাপ্লাই কম, তাই দাম চাচ্ছে বেশি। বাধ্য হয়ে একপাতা এইচপ্লাস কিনেছি ৩৫ টাকা দিয়ে।’

পীরগাছা উপজেলার দেউতি বাজারে এইচপ্লাস ট্যাবলেট কিনতে আসা জাফরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় সময় তার মায়ের ব্যথা লেগে থাকে, এইচ প্লাস খেলে ভালো হয়। গত দুই দিন থেকে দেউতি বড়দরগা বাজার ঘুরেও এই ওষুধ পাচ্ছি না।’

নগরীর মুন ফার্মেসির বাবু মিয়া বলেন, ‘এই সময়ে জ্বর, সর্দির প্রকোপ বেড়েছে। সঙ্গে সঙ্গে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের চাহিদাও বেড়েছে। কোম্পানিগুলোকে ২০ বক্সের অর্ডার করলে তারা দেন এক বক্স। চাহিদার তুলনায় কোম্পানি থেকে ওষুধ পাচ্ছি না।’

পীরগাছার ছিদাম বাজারের রাজ্জাক ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী রাজ্জাক বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলের প্রায় বাড়িতে এখন জ্বর-সর্দি, মাথাব্যথা দেখা দিয়েছে। তাই প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেট কিংবা সিরাপের সংকট দেখাচ্ছে কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা। সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধর্না দিয়েও এইচপ্লাস এবং নাপা ট্যাবলেট ও সিরাপ পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কিছু কোম্পানি আছে, তাদের প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেট নিতে গেলে সাপ্লাই কম বলে নিরুপায় হয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।’

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, দেশে দিন দিন করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশের উপরে। রংপুর বিভাগের আট জেলায় এ পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার। করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে দেড় লাখেরও বেশি মানুষের। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালে বেড়ে চলেছে রোগীর চাপ, সেইসঙ্গে বাড়ছে প্রয়োজনীয় ওষুধের চাহিদা।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় বলেন, প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ সংকটের বিষয়টি তার অজানা। তবে এই জাতীয় ওষুধের সংকট হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
 

আমিরুল/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়