রংপুরে ঘাঘট নদীর তীরে ৩ দিনের ইজতেমা 

রংপুর নগরে ঘাঘট নদীর কোল ঘেঁষে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী তাবলীগ জামায়াতের আঞ্চলিক ইজতেমা। বিশ্ব ইজতেমায় না যাওয়া রংপুর জেলার ২ লাখেরও বেশি মুসল্লি এতে অংশ নেবেন বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) ভোর থেকে নগরের রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে উত্তম হাজীরহাটের রব্বানীর চরে এই ইজতেমা শুরু হয়।

শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে বিশাল আয়তনের এ মাঠে দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি শামিয়ানার নিচে অবস্থান নিচ্ছেন। এখানে ১২টি খুঁটি বা খিত্তার নিচে একসঙ্গে ৫০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।

আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা যায়, বুধবার (২৪ নভেম্বর) সকাল থেকেই রংপুর জেলাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ইজতেমা ময়দানে সমবেত হতে শুরু করেছেন।এখানে রংপুর মহানগর ও সদর উপজেলাসহ তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ, গঙ্গাচড়া, মিঠাপুকুর, পীরগঞ্জ, পীরগাছা এবং কাউনিয়া উপজেলার তাবলীগ জামাতের অনুসারীরা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা আসছেন। 

ইজতেমায় বয়ান করতে রাজধানী ঢাকাসহ সৌদি আরব ও আফ্রিকা থেকে তাবলীগের মুরব্বিরা এসেছেন। সকাল থেকে স্থানীয় মুরুব্বিগণও বয়ান করছেন। 

এদিকে ইজতেমা মাঠসহ আশপাশের এলাকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবীরা নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তুলেছেন। র‌্যাব, পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাসহ সাদা পোশাকে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন। একই সঙ্গে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরাও। ইজতেমাকে নির্বিঘ্নে করতে খোলা হয়েছে পুলিশ কন্ট্রোল রুম। 

ইজতেমায় অংশ নিতে আসা মুসল্লিদের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুসল্লিদের পয়ঃনিষ্কাশনে শৌচাগার, পাম্প ও ট্যাংকি স্থাপন করেছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও নির্মাণ করা হয়েছে অস্থায়ী গোসলখানা। ইজতেমা মাঠে রাতে আলোর জন্য হাজারের বেশি বৈদ্যুতিক বাল্ব সরবরাহ করা হয়েছে।

ইজতেমা প্রস্তুতি কমিটির সদস্য হাফিজুল ইসলাম হাফিজ বলেন, 'ইজতেমাতে রংপুর মহানগরীসহ আট উপজেলার মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন। মাঠে বাঁশের খুঁটিতে টাঙানো পুরো শামিয়ানাটি ওয়াটার প্রুফ। এর নিচে এক সঙ্গে ৫০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। ইজতেমা মাঠের একটি স্কেচ ম্যাপ সংশ্লিষ্ট সবার হাতে পৌছে দেওয়া হয়েছে। স্কেচ ম্যাপ অনুসরণ করে মুসল্লিরা নিজ নিজ উপজেলার হালকায় যেতে পারবেন। এবার ২ লাখের বেশি মানুষের উপস্থিতি ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছ।’

এদিকে ইজতেমা ময়দানকে ঘিরে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের দুইপাশে ব্যবসার পসরা সাঁজিয়ে বসেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। তিন দিনের এ আয়োজনকে ঘিরে বদলে গেছে উত্তম হাজীরহাট এলাকা। নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচলে ট্রাফিক পুলিশসহ স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন। 

আগামী শনিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই ইজতেমা।