ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

শাবিপ্রবি ভিসির পদত্যাগ দাবি শিক্ষার্থীদের, চলবে ভর্তি কার্যক্রম

সিলেট সংবাদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৩, ১৭ জানুয়ারি ২০২২   আপডেট: ১৭:৪৪, ১৭ জানুয়ারি ২০২২
শাবিপ্রবি ভিসির পদত্যাগ দাবি শিক্ষার্থীদের, চলবে ভর্তি কার্যক্রম

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ভিসির পদত্যাগেরও দাবি জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। 

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যেই ২০২০-২১ সেশনে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে সোমবার জানিয়েছেন শাবিপ্রবি ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাক আহমেদ। 

শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ৮ থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাস। পরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের গোলচত্বরে জমায়েত হয়ে ভিসির পদত্যাগের দাবি জানাতে শুরু করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘দাবি মোদের একটাই, ভিসির পদত্যাগ চাই’, ‘যেই ভিসি বুলেট মারে, সেই ভিসি চাই না’, ‘যে ভিসি বোমা মারে, সেই ভিসি চাই না’, ‘এক দফা এক দাবি, ভিসি তুই এখন যাবি’ বলে স্লোগান দেয়। 

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘যেই ভিসি শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করান সেই ভিসি আমরা চাই না। এই ভিসিকে আমরা ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। আমরা তার পদত্যাগ চাই।’

এর আগে রোববার (১৬ জানুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি শিক্ষা ভবনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ভিসিকে অবরুদ্ধ করেন। 

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগের দাবিসহ তিন দফা দাবি আদায় এবং ছাত্রীদের চলমান আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগে রোববার সকাল ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর সংলগ্ন রাস্তা অবরোধ করেছিল শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ৩টার দিকে গোলচত্বরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দীন আহমদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস, প্রক্টর ড. আলমগীর কবির এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মহিবুল আলমসহ অন্য শিক্ষকরা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক সমিতির সভাপতি শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, হলের গুণগত মান উন্নত এবং অব্যবস্থাপনার সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে সাত দিনের সময় চান। কিন্তু শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি না মানার প্রেক্ষিতে তারা বর্ধিত সময় দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। তখন শিক্ষার্থীরা তাদের সামনে ধিক্কার ধিক্কার, প্রশাসন ধিক্কার বলে স্লোগান দিতে থাকেন। 

এরপর শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের পিছু নেন এবং অর্জুন তলা থেকে ফিরে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে গেলে ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে সামনে পান। তখন শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পিছু নিয়ে ‘ধিক্কার ধিক্কার’ স্লোগান দিতে থাকে। এসময় উপাচার্যকে নিয়ে উপস্থিত শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে ঢুকলে শিক্ষার্থীরা সেখানে ভিসিকে অবরুদ্ধ করেন।

ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত করার জন্য বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে ধাক্কাধাক্কি ও বাকবিতন্ডা হয়। বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। 

ওই দিন সন্ধ্যায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পুলিশসহ অর্ধশতাধিক আহত হন।  সংঘর্ষের পর জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন।  সোমবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিছু কিছু শিক্ষার্থী হল ছেড়ে গেলেও এখনো বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। 

তিনদফা দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে আন্দোলন করছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন: শাবিতে হল প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

শাবিপ্রবিতে আন্দোলনরতদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ

শাবিপ্রবি ভিসি অবরুদ্ধ

শাবিপ্রবি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

বন্ধ ঘোষণার পরও শাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ, প্রভোস্টের পদত্যাগ 

নূর আহমদ/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়