ঢাকা     শনিবার   ০৪ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২১ ১৪৩১

বাবার থেকে মেয়ে ২১ বছরের বড়!

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৯, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২   আপডেট: ১৮:২৭, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
বাবার থেকে মেয়ে ২১ বছরের বড়!

বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী। ফাইল ফটো

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের থেকে সন্তানের বয়স বেশি হওয়ায় প্রায় দু’বছর ধরে ভাতা বন্ধ রয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলীর (৯৪)।

পরিবারের সদস্যদের দাবি, জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঘুরেও সুরহা না পেয়ে অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি মারা যান এই মুক্তিযোদ্ধা।

জানা যায়, ভূরুঙ্গমারী উপজেলার চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ধুলার কুটি গ্রামের মৃত বাবন শেখের পুত্র আকবর আলী। প্রায় ৪৩ বছর বয়সে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। সেই সময় তিনি বিবাহিত ছিলেন। তার পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তানের মধ্যে যুদ্ধের আগে তিন সন্তান জন্মগ্রহণ করেছিল।

মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা ১৭ নাম্বার বই ৪০১৪৭ ক্রমিক, লাল মুক্তিবার্তায়- ৩১৬০৪০৫২০ ক্রমিক এবং ২০০৫ সালের ২১ মে বেসামরিক গেজেট ৩৭৯১ পৃষ্ঠায় গেজেট ১০৬৪ নাম্বারে তার নাম রয়েছে। ২০০৮ সালের ১ অক্টোবর থেকে তিনি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেয়ে আসছিলেন। তবে ২০২০ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য অনলাইনে পূরণ করতে গিয়ে জন্ম তারিখের ত্রুটির কারণে তার ভাতা বন্ধ হয়ে যায়।

জন্ম সনদ অনুযায়ী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলীর জন্ম তারিখ ১১ আগস্ট ১৯২৮ সাল। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রে দেখানো হয়েছে ১০ মে ১৯৭১ সাল। অথচ তার বড় ছেলে আমির হোসেনের জন্ম তারিখ দেখানো হয়েছে ২ মার্চ ১৯৬০ সাল। বোনদের জন্ম সাল দেখানো হয়েছে ১৯৫০ ও ১৯৬০ সাল। অর্থাৎ বাবার থেকে সন্তানরা বড়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা হযরত আলী বলেন, আকবর আলী ও লস্কর আলী আমার জেঠাতো ভাই। আমরা তিন জনই যুদ্ধ করেছি। মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও পেয়েছি। কিন্তু হঠাৎ জাতীয় পরিচয়পত্রে সমস্যা হওয়ায় আকবর আলীর ভাতা বন্ধ হয়ে যায়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেওয়া বলেন, ভাতা বন্ধ হবার পর থেকে উনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঠিকমত চিকিৎসা করাতে না পাড়ায় মারা যান। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে অনেক দৌড়াইছি। কিন্তু কেউ সারা দেয় নায়।

বড় ছেলে আমির হোসেন বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র করার সময় বাবার বয়স দিছে ১৯৭১ সাল। আমরা এই জন্ম তারিখ ঠিক করার জন্য যেখানেই গেছি খালি ট্যাহা-ট্যাহা করে। তাও বাবার জন্ম তারিখ ঠিক হয়নি।

জেলা নির্বাচন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম রাকিব বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলীর জন্ম তারিখ সংশোধনের আবেদনটি বিবেচনা করে ‘গ’ ক্যাটাগরি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এই আবেদনটি নিষ্পত্তি করার জন্য প্রয়োজনীয় তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন সাবমিট করা হয়েছে।

রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন বলেন, বিষয়টি নজরে এসেছে। যত দ্রুত সম্ভব সমস্যাটি সমাধান করার চেষ্টা করব।

সৈকত/কেআই

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ