ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৮ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

চা শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ১৭ আগস্ট ২০২২   আপডেট: ১১:৩৮, ১৭ আগস্ট ২০২২
চা শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত

হবিগঞ্জে আন্দোলনরত শ্রমিকরা। ছবি: রাইজিংবিডি

হবিগঞ্জ জেলার চা বাগানগুলোতে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে শ্রীমঙ্গলে আসেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী। তিনি ধর্মঘট স্থগিত করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানালেও চা শ্রমিক ইউনিয়ন তা প্রত্যাখান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।

আরো পড়ুন:

আজ বুধবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে ঢাকায় মজুরি বিষয়ে সরকার, মালিক ও শ্রমিক পক্ষের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। 

এদিকে, হবিগঞ্জ জেলার ৪১টি চা বাগানে শ্রমিকরা ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন। তাদের দাবি- শ্রমের মজুরি দৈনিক ৩০০ টাকা দিতে হবে, না হলে তারা ঘরে ফিরে যাবে না। শ্রমিক ধর্মঘটে চা বাগানের উৎপাদন বন্ধ আছে। এতে লাখ লাখ টাকার পাতার ক্ষতি হচ্ছে। এ অবস্থায় অচল হয়ে পড়েছে চা বাগানগুলো।

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটের চানপুর চা বাগানের বাসিন্দা বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, আলোচনার জন্য ঢাকায় বসা হবে। সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। কিন্তু শ্রমিকরা আন্দোলনের যে পর্যায়ে আছেন, সেখান থেকে ফেরা কঠিন। তৃণমূল পর্যায়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে, সেখান থেকে মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা আসা ছাড়া ফেরা যাবে না।

শ্রমিক নেতারা বলেন, দীর্ঘ ১৯ মাস থেকে তাদের মজুরি বাড়ানোর বিষয়ে মালিকপক্ষ কথা বলতে রাজি হচ্ছে না। দুই বছর পরপর মজুরি বৃদ্ধির করার কথা।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে দৈনিক ১২০ টাকা মজুরিতে কাজ করছেন জেলার চা বাগানগুলোর শ্রমিকরা। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে এ টাকা অত্যন্ত অপ্রতুল। তাই মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে ৯ থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত তারা দৈনিক দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন। 

গত বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের ১০ জন শ্রমিক নেতার সঙ্গে শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বিভাগীয় শ্রম দফতরের কর্মকর্তারা বৈঠকে বসলেও আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। শনিবার (১৩ আগস্ট) থেকে টানা ধর্মঘটের ডাক দেন শ্রমিকরা।

চা বাগান সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, চুনারুঘাট, মাধবপুর উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার ৭০৩.২৪ হেক্টর জমিতে ২৫টি ফ্যাক্টরিযুক্ত চা বাগান রয়েছে। এছাড়া ফাঁড়িসহ প্রায় ৪১টি বাগানের প্রায় প্রতি হেক্টর জমিতে ২২-২৫ শ কেজি চা পাতা উৎপাদন হয়। এসব বাগানে বছরে ১ কোটি ৩০ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়ে থাকে। 

বাংলাদেশ চা বোর্ড ও চা-শ্রমিক ইউনিয়নের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সবমিলিয়ে ২৫৬টি চা-বাগান আছে। এতে নিবন্ধিত শ্রমিকের সংখ্যা ১ লাখ ৩ হাজারের বেশি। অস্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ৩০ হাজার। দেশে মোট চা শ্রমিক পরিবারের বাসিন্দা প্রায় ৮ লাখ। এর মধ্যে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজার। বাগানে কাজ না পেয়ে হাজার হাজার শ্রমিক বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। 

/মামুন/সাইফ/

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়