গাজীপুরে মকুল নীটওয়্যার কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে অবস্থিত মকুল নীটওয়্যার লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা বুধবার সকালে কাজে গিয়ে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখতে পান
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ীর নীলনগর এলাকার মকুল নীটওয়্যার লিমিটেড কারখানা বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিচালক বরাবর কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধের জন্য লিখিত আবেদন দেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মো. মইনুল ইসলাম মকুল।
আজ সকালে শ্রমিকরা প্রতিদিনের ন্যায় কারখানায় আসেন কাজ করতে। তারা এসে দেখেন, গেটে কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণার নোটিশ সাঁটিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে শ্রমিকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করতে দেখা যায়।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন যাবৎ আন্তর্জাতিক বাজারে পোশাক রপ্তানির সঙ্গে জড়িত থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, ক্রয়াদেশ (অর্ডার) সংকট, উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি এবং আর্থিক সক্ষমতার মারাত্মক ঘাটতির কারণে কারখানার স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যার কারণে কারখানাটি স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। উক্ত পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব নয়, বিধায় বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (সংশোধিত) এর ধারা ২৮ক এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধি ২০১৫ এর বিধি ৩২ অনুসারে কারখানাটি (১৭ডিসেম্বর) বুধবার হতে স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি অনুযায়ী আলোচনা সাপেক্ষে শ্রমিক-কর্মচারীর পাওনা পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অতএব, উপরোক্ত বিষয়াদি বিবেচনাপূর্বক বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ২৮ক এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধি ২০১৫ এর বিধি ৩২ মোতাবেক মুকুল নীটওয়্যার লিমিটেড-এর কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণার বিষয়ে আপনার সদয় অবগতির জন্য জানানো হচ্ছে।
কারখানার কোয়ালিটি পরিদর্শক মো. সাগর আলী বলেন, “কর্তৃপক্ষ কারখানা না চালাইতে পারলে আমাদের কিছু করার নাই। শ্রম আইন অনুযায়ী আমাদের যে পাওয়ানাদি তা পরিশোধ করে দেওয়া হোক।”
শ্রমিক জুয়েল রহমান বলেন, “আমরা গত সোমবার অফিস করে বাসায় যাই। ১৬ ডিসেম্বর কারখানা বন্ধ ছিল। আজ সকালে কারখানায় এসে দেখি স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এখন আমরা কোথায় যাব। রুমভাড়া, দোকানের বাকি, ছেলে মেয়েদের স্কুলের বেতন কীভাবে দেব বুঝেতে পারছি না।”
সুয়িং অপারেটর আনোয়ারা বেগম বলেন, “আমরা ১৫ তারিখে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ডিউটি করছি। কারখানা বন্ধ করে দেবে আমাদেরকে কিছু বলে নাই। আজকে সকালে আইসা দেখি কারখানা বন্ধ। কারখানা বন্ধ ঠিক আছে, আমাদের টাকা দিয়ে দেখ।”
এ বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মইনুল ইসলাম মকুলের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ কোনাবাড়ী জোনের পরিদর্শক মো. মোর্শেদ জামান জানান, মালিক পক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করবে বলে জানিয়েছেন।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ