ছিনতাই হওয়া দুই ট্রাক লােহার সন্ধান মিলেনি ১৯ দিনেও 

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশীর রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সন্নিকটে এনআরবিসি ব্যাংকের সামনে থেকে ছিনতাই হওয়া দুই ট্রাক লোহার সন্ধান করতে পারেনি পুলিশ। 

গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে এই লোহা ছিনতাইয়ের পর ১৯ দিন পার হলেও  পুলিশ কোন কূলকিনারা করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লোহা ব্যবসায়ী মুন্সিগঞ্জের আব্দুল হামিদ। 

ঘটনার পরপরই তিনি ঈশ্বরদী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। 

রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প কেন্দ্রীক শক্তিশালী লোহা চোর ও ছিনতাইকারী সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকার অভিযোগ রয়েছে। 

এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, এই চক্রটি বেশ প্রভাবশালী ও সুচতুর হওয়ায় তাদের শনাক্ত ও চিহ্নিত করা বেশ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। 

তিনি বলেন, দুই ট্রাক লোহা ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ তৎপরতা চালালেও তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় প্রযুক্তিগতভাবে তাদের অবস্থান নির্নয় করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমরা আমাদের নানা সোর্স ব্যবহার করে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি। 

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, নিরব অ্যালুমনিয়াম স্টারের নামে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান নিকিমট অটামট্রয়-জেএসসি’র কাছ থেকে ৩৫০ মেট্টিক টন লোহা স্ক্যাপ কেনা হয়। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে আব্দুল হামিদ ১৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার সময় ৬টি ট্রাক যােগে ৭৪ টন ৩১০ কেজি লোহা স্ক্যাপ লােড করে ডেলিভারি নেন। 

রাত ১০টার সময় রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বের হয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের সামনে এসে গাড়ীগুলাে বাঁধার জন্য দাঁড় করানাে হয়। কিছু সময় পরই অজ্ঞাত কিছু লােকজন এসে ড্রাইভারকে মারধর করে ড্রাইভারসহ ৬টি ট্রাক ছিনতাই করে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে। 

ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ বলেন, অনেক খােঁজখবর করে পরের দিন ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৮ টার দিকে পাবনা সদরের গাছপাড়া পেট্রল পাম্পের সামনে মালামাল ভর্তি ৪টি ট্রাকের সন্ধান পাই। কিন্তু বাকী দুটি ট্রাকের কােনো সন্ধান করতে পারিনি। ছিনতাই হওয়া ওই দুটি ট্রাকের ড্রাইভার হচ্ছেন আলতাব হােসেন (ট্রাক নং ঢাকা মেট্টাে-ট-১৮-৪২৫১) ও ড্রাইভার কাওছার আলী (ট্রাক নং ঢাকা মেট্টো- ১৫-৫৫৫৬)। 

আব্দুল হামিদের অভিযােগ, ইতােপূর্বেও রপপুর প্রকল্পের আশেপাশে থেকে কমপক্ষে ১০/১২ টি লােহা ভর্তি ট্রাক ছিনতাই বা গায়েব হয়ে গেলেও সেগুলাে উদ্ধার হয়নি। এই লােহা চাের সিন্ডিকেটের কারণে আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীরা নিরাপদে ব্যবসা করতে পারছি না। 

তিনি আরও বলেন, ছিনতাই হওয়া লোহা স্ক্যাপের বাজারমূল্য কমপক্ষে ৪০ লাখ টাকা। এতোগুলো টাকার মাল উদ্ধার না হলে আমাকে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।