ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

বরিশালে ট্রলারে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৯, ১৪ অক্টোবর ২০২২   আপডেট: ১৬:৫৭, ১৪ অক্টোবর ২০২২
বরিশালে ট্রলারে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে ব্যবহৃত ট্রলার আগুন লাগার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো শহিদুল ইসলামকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়। 

আগামী রোববার কমিটির সদস্যদের এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হবে বলে শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মো. জসীমউদ্দিন হায়দার। 

জসীমউদ্দিন হায়দার বলেন, ‘ট্রলারটিতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ফাতিমার বিরুদ্ধে। কিন্তু তিনি বিষয়টি দুর্ঘটনা বলে দাবি করেছেন।’ 

এদিকে ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী ট্রলারের মাঝি ও মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার ট্রলার ভাড়া  নিয়েছিলেন ইউএনও ম্যাডাম। আর তার নিদেশেই আনসাররা আমার ট্রালরটি জ্বালিয়ে দিয়ে আমাকে বেকার করে দিছে। আমি ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি জানাই।’

বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ফাতিমা বলেন, ‘আমরা আনোয়ারের ট্রলার ভাড়া করেছিলাম। তার ট্রলার পুড়িয়ে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। অভিযানে জব্দ হওয়া কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি, ট্রলার নয়। আর আমি যখন জব্দ হওয়া মাছগুলো এতিম খানায় দিচ্ছিলাম তখন ট্রলারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ট্রলার তো আমি জব্দ করিনি, ট্রলারটিতে আগুন লাগার বিষয়টি দুর্ঘটনা। 

বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরের পর উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও ও পুলিশ সদস্যরা নদীতে অভিযান চালায়। সন্ধ্যার পর তারা অভিযান শেষ করে ফিরে আসেন এবং জব্দ হওয়া কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ফেলেন। পাশাপাশি জব্দ হওয়া মাছ এতিমখানায় বিতরণ করা হয়। পরবর্তীতে যে ট্রলেরে করে অভিযান চালানো হয় সেই ট্রলারের মাঝিকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন ইউএনও। একপর্যায়ে ওই মাঝি ভয়ে পালিয়ে যায়। পরে ইউএনও সাহেবের সঙ্গে থাকা দেহরক্ষী আনসার সদস্যরা ট্রলারটিতে ডিজেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।’ 

ওসি আরও বলেন, ‘ট্রলার পুড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে আমাদের কাছে লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ আসেনি। ট্রলার মালিক বা মাঝি কেউ আমার কাছে আসেনি। আমাদের কাছে যদি কোনো অভিযোগ আসে তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’

বাবুগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত ষ্টেশন অফিসার আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমার রাত ৯টা ৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুইটি ফায়ার ষ্ট্রিগুইসার দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছি। অগ্নিকান্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা নেই।’

বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী ইমদাদুল হক দুলাল বলেন, ‘অভিযান শেষে ট্রলারের মাঝি জব্দ মাছের কিছু বড় ইলিশ সরিয়ে রাখে। এটিই ইউএনও’র রাগের কারণ। ইউএনও’র নির্দেশ ছিল অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও ট্রলার ভিড়াবে না। কিন্তু মাঝি সে নির্দেশ অমান্য করে অন্যত্র ট্রলার ভিড়ায় এবং বড় ইলিশ সরিয়ে ফেলে। এই কারণে ইউএনও ক্ষিপ্ত হয়ে আনসার সদস্যদের ট্রলারটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।’

স্বপন/ মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়