ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ধর্মঘটের রসিকতা মানুষ বোঝে: নজরুল ইসলাম

রাজশাহী সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৬, ৪ ডিসেম্বর ২০২২  
ধর্মঘটের রসিকতা মানুষ বোঝে: নজরুল ইসলাম

নজরুল ইসলাম খান।

বিএনপির প্রত্যেক বিভাগীয় গণসমাবেশের আগেই ডাক দেওয়া পরিবহন ধর্মঘটকে একটি ‘রসিকতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, ‘ধর্মঘটের এই রসিকতা সাধারণ মানুষ বোঝে।’

রোববার (৪ ডিসেম্বর) সকালে রাজশাহী নগরীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন। 

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশের আগে বাসের মালিকরা বলে টেম্পু, অটোরিকশা, নছিমন করিমনের বিরুদ্ধে তাদের ধর্মঘট। কিন্তু আমরা দেখি ওই নছিমন, করিমন, টেম্পু অটোরিকশার যারা আছে তারাও ধর্মঘট করে। তাদের কি দাবি? বাসের লোকদের যে দাবি, তার উল্টো দাবি এদের এবং সেই দাবিতে ধর্মঘট। এই রসিকতা সাধারণ মানুষ বোঝে।’

তিনি আরও বলেন, “কয়দিন আগে আওয়ামী লীগ সেক্রেটারির বক্তব্য শুনলাম- ‘রাজশাহীতে কোন ধর্মঘট হবে না। বলে দেওয়া হয়েছে।’ কিন্তু গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ধর্মঘট ছিল, তিন দিন ধরে ধর্মঘট। কোনো দাবি নিয়ে ধর্মঘট করলে প্রশাসন তাদের ডাকে কথা বলে। কখনও সমাধান হয় বা হয় না, আলোচনার ভিত্তিতে প্রত্যাহার করে। কিন্তু গত কয়েকটা ধর্মঘট দেখলাম, ঠিক আমাদের সমাবেশের একদিন, দুদিন, তিনদিন আগে থেকে ধর্মঘট করা হয়। আমাদের সমাবেশ শেষ হওয়া মাত্র কোন আলোচনা ছাড়া, কোনো দাবি আদায় ছাড়া ধর্মঘট প্রত্যাহার হয়।”

তিনি বলেন, ‘লোকেরা আসার পথে তাদেরকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হলো, কারা নামিয়ে দিল? পুলিশ। তারা তো ধর্মঘট ডাকে নাই। আমরা ধর্মঘট ডাকলে ধর্মঘট যদি নস্যাৎ হয় কেউ যদি ভাঙার চেষ্টা করে তারা সহযোগিতা করে। আর এবার কি হলো? আমাদের কর্মীদের নিয়ে যেসব বাস আসছিল, পুলিশ সেসব বাস বন্ধ করে দিল। খাবার আসছিল, সেই খাবারসহ ট্রাক ফিরিয়ে দেওয়া হলো। চাবি কেড়ে নেওয়া হলো। তাই বলে ওই নেতাকর্মীদের কিন্তু আটকে রাখা যায়নি। তারা হেঁটে সমাবেশে যোগ দিয়েছে। মাইলের পর মাইল হেঁটে সামাবেশে এসেছে নেতাকর্মীরা।’

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সাধারণ মানুষ যারা দেখেছে বা শুনেছে, তাদের কাছে কি সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে? প্রশ্নই আসে না। বরং তারা এই সরকারের অত্যাচারী মনোভাবের নিন্দা করেছে। একটা রাজনৈতিক দল একটা শান্তিপূর্ণ সভা করবে, সেখানে যেতে বাধা দেবেন? তাদেরকে এতো লম্বা পথ হেঁটে যেতে বাধ্য করবেন, যেখানে বৃদ্ধ মানুষ আছে, অসুস্থ মানুষ আছে? এই ধরনের অমানবিক কাজের জন্য তারা সরকারকে অভিযুক্ত করছে। যারা সভায় অংশগ্রহণ করেছে, আমরা শুধু তাদের সমর্থন পাইনি, যারা আসতে পারে নাই, তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। ওদের সমর্থন আমাদের প্রতি আরো বেড়েছে। ওটা আল্টিমেটলি আমাদের ঝুলিতে আসছে তাদের ওই সমর্থনটা।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘কোথাও খেয়া নৌকা পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানুষ সাঁতরে নদী পার হয়ে জনসভায় এসেছে। বাস বন্ধ, মানুষ ভ্যানে করে এসেছে। ভ্যান বন্ধ করা হয়েছে, সাইকেলে-মোটরসাইলে এসেছে। সেটা বন্ধ করলে মানুষ হেঁটে এসেছে। মাইলের পর মাইল হেঁটে এসেছে। কাজেই আমরা মনে করি, জনসভায় জনসমাগম হয়েছে এটা আমাদের আনন্দের ব্যাপার। কিন্তু যারা আসতে পারে নাই, তাদের কারণে সরকারের যে ভাবমূর্তির বিপর্যয় হলো, এটা আরো বেশি আনন্দের ব্যাপার আমাদের জন্য। সমাবেশে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হলেও এতে বিএনপির লাভ হয়েছে। 

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘এই কষ্টের মধ্যে দিয়ে একটা লাভ হয়েছে তা হলো বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ কাছাকাছি এলো। তিন দিন একসাথে থাকলো। এটা একটা রাজনৈতিক দলের জন্য মস্ত বড় অর্জন।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ চাইলে জনসভা করবে, আমরা করতে চাইলে বাধা দেবে- এটা একটা গণতান্ত্রিক সমাজে গ্রহণযোগ্য না। এই আচরণ অগণতান্ত্রিক, স্বৈরাচারী। আমরা এর নিন্দা জানাই। 

মতবিনিময় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ হাসান টুকু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, রাজাশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত এবং এএইচএম ওবায়দুর রহমান চন্দন উপস্থিত ছিলেন।

শিরিন সুলতানা/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়