ঢাকা     শনিবার   ১২ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২৭ ১৪৩১

হলুদের ঢেউয়ে হাসছে কৃষক

এ কে আজাদ, খাগড়াছড়ি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৬, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩  
হলুদের ঢেউয়ে হাসছে কৃষক

ছবি: রাইজিংবিডি

সরিষার উৎপাদন খরচ কম, অধিক মুনাফা হওয়ায় দিন দিন আবাদ বাড়ছে খাগড়াছড়ি জেলা‌তে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সঠিক পরিচর্যায় উপজেলায় চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলাগু‌লোর বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে শুধু হলুদের ঢেউ। বাজারে ভালো দাম থাকায় চাষিরা দিন দিন সরিষাচাষে ঝুঁকছেন। সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখেও ফুটেছে হাসি।

জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ শোভা ধারণ করেছে। মাঠে পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। চলতি বছরে মাটিরাঙা উপজেলায় ১১৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।

উপজেলায় মাঠের পর মাঠ সরিষার হলুদ ফুলে ভরে গেছে। কৃষকের রঙিন স্বপ্ন দুলছে শিশিরভেজা সরিষার হলুদ ফুলের ডগায়। কিন্তু লাগাতার ধান-পাটসহ উৎপাদিত কৃষি পণ্যের দাম না পাওয়ায় কৃষকরা ঝুঁকছেন লাভজনক ফসল সরিষা চাষের দিকে।

গত মৌসুমে স্থানীয় বাজারগুলোতে দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা চলতি মৌসুমে সরিষাচাষে অধিক আগ্রহী হয়েছেন। বর্তমানে এ উপজেলার মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুল শোভা পাচ্ছে। মৌমাছিরা সরিষা ক্ষেতে ভিড় করছে মধু সংগ্রহে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

উপজেলার সরিষাচাষি ত্রিপুরা রাইজিংবি‌ডি-কে বলেন, ‘কম খরচ, কম সময় আর কম পরিশ্রমে সরিষা চাষ করা যায় বলে এটি অত্যন্ত লাভজনক ফসল। প্রতিবিঘা জমিতে খরচ হয় ৩৫০০ টাকা। জমি থেকে চলতি মৌসুমে ৪-৫ মণ হারে সরিষা পাওয়া যাবে।

আরেক কৃষক আলী মিয়া বলেন, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে সরিষা কাটা হবে।  বর্তমানে বাজারে প্রতিমণ সরিষা চার হাজার টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্ত-জোড়া মাঠের পর মাঠ। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখর হয়ে উঠেছে মাঠ। সরিষা চাষাবাদের ফলে আমন ও বোরো ধানের মাঝে উপরি ফসল পেয়ে তাদের লাভ হয়। পাশাপাশি নিজেদের সংসারে তেলের চাহিদাও পূরণ হয়।

মাটিরাঙা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩৩ হেক্টর জমিতে সরিষাচাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। সেখানে সাময়িক পতিত এক ফসলি ১১৫ হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। সরিষায় ফুল আসাও শুরু করেছে। তেল জাতীয় ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে চলতি মৌসুমে উপজেলার ৪০০ জন কৃষককে কৃষি প্রণোদনার অংশ হিসেবে বিনামূল্যে উন্নত জাতের সরিষার বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাজারে সয়াবিনসহ অন্যান্য ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে গত মৌসুমে সরিষার ব্যাপক চাহিদা ছিল। এবারও সরিষার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গাছ দেখে বোঝা যাচ্ছে, ফলন ভালো হবে। সরিষা একটি লাভজনক ঝুঁকিমুক্ত ফসল।

সরিষার আবাদ বৃদ্ধিতে সরকার কৃষকদের বীজ, সার ও পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করছে। সরিষা চাষ সম্প্রসারণের জন্য কৃষি বিভাগ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সরকারিভাবে প্রায় ৪৩০ জন কৃষকের মাঝে বীজ, সার ও ৪২০ জন কৃষকের মাঝে বীজ বিতরণ করা  হয়েছে। দাম ভালো থাকায় চাষিরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

ঢাকা/এনএইচ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়