ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

বিনামূল্যের প্রিপেইড মিটার বিক্রি ৮-১০ হাজারে

নেত্রকোণা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৪, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  
বিনামূল্যের প্রিপেইড মিটার বিক্রি ৮-১০ হাজারে

নেত্রকোণায় গ্রাহকদের জন্য দেওয়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিনামূল্যের প্রিপেইড মিটার ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ নিয়ে গ্রাহক ক্ষুব্ধ হলেও  জেলা পিডিবি’র প্রধান নির্বাহীর দাবি গ্রাহক খুশি হয়ে তাদের বখশিস দিচ্ছে। তিনি মসজিদ, মন্দিরে ১৯০টি প্রিপেইড মিটার বিনামূল্যে দিয়েছেন বলেও জানান। যদিও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য তিনি সাংবাদিকদের দেননি। 

মঙ্গলবার সরেজমিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে অনেক বাসা-বাড়িতে বিদ্যুতের নতুন প্রিপেইড মিটার লাগানো হয়েছে। প্রতিটি মিটারের জন্য গ্রাহকের খরচ হয়েছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এদিকে শহরের ৭ থেকে ৮টি মসজিদ এবং কয়েকটি মন্দিরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের কোনো মিটার দেওয়া হয়নি।

শহরের পারলা চল্লিশাকান্দা গ্রামের আব্দুস ছালাম গত মাসে বাসায় প্রিপেইড মিটার লাগিয়েছেন। এ জন্য তাকে ৮ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। আব্দুস ছালাম বলেন, ‘পিডিবি অফিসে মিটারের জন্য আবেদন জমা দিয়েছিলাম। লাইনম্যানের কাছে ৮ হাজার টাকা দেওয়ার পর পিডিবি’র একটি প্রিপেইড মিটার লাগিয়ে দিয়েছে।’

কাটলী গ্রামের বঙ্গবন্ধু মোড় এলাকার মাহবুব মিয়া বলেন, আমার দুই দোকানে দুইটা প্রিপেইড মিটার লাগিয়েছি। একটা সাড়ে নয় হাজার, আরেকটা সাড়ে আট হাজার টাকায়। আবেদন করার পর অফিসের লাইনম্যানকে টাকা দিয়েছি।  তারা সরকারি মিটার লাগিয়ে দিয়েছে। 

মিটারগুলো যে বিনামূল্যের জানতেন না মাহবুব।  

একই এলাকার কাজল মিয়া বলেন, আশেপাশে অনেকেই প্রিপেইড মিটার বাসায় লাগাচ্ছে। অফিসের লোকজনকে টাকা দিলে মিটার লাগিয়ে দিয়ে যায়। যার কাছ থেকে যেমন পারে নিচ্ছে। সাধারণ মানুষ তাদের হাতে জিম্মি। 

নেত্রকোণা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত বছরের শেষের দিকে প্রিপেইড মিটারগুলো আসে। দুই দফায় এসেছে প্রায় এক হাজার মিটার। এর মধ্যে ৬৫০টি মিটার বিতরণ হয়েছে। মিটার প্রতি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে।

ওই কর্মী বলেন, আমারা কর্মীরাই সেই টাকা নির্বাহী প্রকৌশলীকে দেই। যদিও নিয়মানুযায়ী এসব প্রিপেইড মিটার মসজিদ-মন্দির ও গরিব মানুষকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়ার কথা। কিন্তু সেগুলো ধনীদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। 

শহরের নাগড়া শিব মন্দিরের দায়িত্বে থাকা লিটন কুমার ঠাকুর বলেন, আমরা প্রিপেইড মিটার পাইনি। এমনকি আমার জানা মতে আশপাশের কোন মন্দিরে এসব মিটার এখনো দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে নেত্রকোণা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ে গেলে প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাহমুদ এলাহী প্রথমে মিটার বাবদ টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এসব মিটার বিনামূল্যে দেওয়া হয়। প্রতিমাসে গ্রাহককে এর জন্য ৪০টাকা চার্জ দিতে হবে। পরে টাকা নেওয়ার তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করলে বলেন, কেউ খুশি হয়ে টাকা দিলে তো কিছু করার থাকে না। 

কতগুলো প্রিপেইড মিটার গ্রাহকদের দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি একেক সময় একেক তথ্য দেন। সঠিক তথ্য লিখিত আকারে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি দুই ঘণ্টা সময় ক্ষেপণ করেও কোনো তথ্য দেননি।  

সেতু//

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়