ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বিকল্প সড়ক না রেখেই সেতু নির্মাণ, ভোগান্তিতে ৫ হাজার মানুষ

তারিকুল ইসলাম, শেরপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৭, ২২ মার্চ ২০২৩  
বিকল্প সড়ক না রেখেই সেতু নির্মাণ, ভোগান্তিতে ৫ হাজার মানুষ

শেরপুরের লছমনপুরে জমিতে যাতে বৃষ্টির পানি জমে না থাকে সে জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে একটি সেতু। কিন্তু সেতুটি নির্মাণে বিকল্প সড়ক তৈরি না করে যাতায়াতের মূল সড়কটি কেটে ফেলায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সড়কের দুই পাড়ে বসবাসকারী তিনটি গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ ও স্কুল শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে অসুস্থ ও গুরুতর রোগীদের হাসপাতালে আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে চরম বিপাকে পড়েতে হচ্ছে গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের। 

এদিকে, বিকল্প সড়ক তৈরি না করার বিষয়টিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খামখেয়ালী ও প্রশাসনের নজরদারির অভাব বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের জমসেদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের পেছনের সড়কে নির্মাণ হচ্ছে একটি সেতু। এলাকাটি নিচু হওয়ায় বৃষ্টির সময় সেখানে প্রচুর পানি জমে থাকে। তাই জমে থাকা পানি যাতে সরে যেতে পারে সে কারণে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতু তৈরির জন্য মূল সড়কটি কেটে ফেলায় বাধ্য হয়ে গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের পায়ে হেটে ধান ক্ষেতের আইল দিয়ে আবার কেউ কেউ পানিতে ভিজে রাস্তা পার হচ্ছেন।  ফলে ইউনিয়নের হাতি আগলা পূর্ব, পশ্চিম ও মোল্লাপাড়া গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষ কুসুমহাটি বাজারে আসতে পারছেন না। আগে ওই বাজারে যেতে স্থানীয়দের সময় লাগতো ১০ মিনিট এখন লাগছে ৩০ মিনিট।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫ মিটার লম্বা সেতুটির নির্মাণ কাজ পায় মেসার্স নাফিউ কন্সট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আড়াই মাস আগে রাস্তা ভেঙে পাইলিং এর কাজ শুরু করে ঠিকাদারের লোকজন। এরপর থেকে শুরু হয় দুর্ভোগ।

ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছাদিয়া আক্তার জানায়, আমাদের প্রতিদিনি স্কুল ও প্রাইভেটে যেতে হয়। এখন এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের পোশাক জমে থাকা পানিতে ভিজে যায়। বৃষ্টি হওয়ায় পানি জমে থাকায় এখন আমাদের যাতায়াতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। 

কৃষক আব্দুল্লাহ বলেন, তারা যখন মনে চায় তখন ব্রিজ তৈরি করুক। ব্রিজ তৈরির জন্য রাস্তা কেটে ফেলায় এখন সেখানে হাটু পানি জমা হয়েছে। আমরা আমাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য নিয়ে কিভাবে বাজারে যাবো? পাশ দিয়ে যদি একটা রাস্তা তৈরি করে দিতো তাহলে তো সমস্যা হতো না। আমাদের হাট বাজারে যেতে এখন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্বাস আলী বলেন, আমি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলেছি, আপনারা নির্মাণকাজ চলাকালীন সেতুর পাশ দিয়ে অস্থায়ী বিকল্প রাস্তা তৈরি করে দেন যাতে মানুষ চলাচল করতে পারে। কিন্তু তারা আমার কথা শোনেনি। এর আগেও এই ঠিকাদার আমাদের আরেকটি রাস্তায় সেতু নির্মাণের কাজ পায়। সেখানেও তারা বিকল্প রাস্তা তৈরি করেনি। পরে বাধ্য হয়ে আমরা এলাকাবাসী নিজেরা বিকল্প রাস্তা তৈরি করি।

লছমনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বলেন, আমি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি অবহিত করেছি। তাদের দ্রুত নির্মাণকাজ শেষ করার অনুরোধ করেছি।

শেরপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ খবিরুজ্জামান খান বলেন, সেতু নির্মাণাধীন রয়েছে। যে কোনো সেতু তৈরির সময় ডায়ভারশন রোড তৈরি করতে হয়। আমরা দ্রুত রাস্তা করে দেবো যাতে জনগণের ভোগান্তি কমে।

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়