ঢাকা     শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২০ ১৪৩১

কেসিসি নির্বাচন: তালুকদার খালেকের প্রচারণা শুরু

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৩, ২৫ এপ্রিল ২০২৩  
কেসিসি নির্বাচন: তালুকদার খালেকের প্রচারণা শুরু

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের দলীয় মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় তালুকদার খালেক এর শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই মাঠে। ফলে একক নির্বাচনে তালুকদার আব্দুল খালেকই মাঠ নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। 

এদিকে, রমজানে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ছোট দলগুলোর প্রার্থীরা ইফতার পার্টিতে সীমিত পরিসরে অংশ নেন। ঈদ শেষে এখন স্বতন্ত্র ও ছোট দলের প্রার্থীরা এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা জোর কদমে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি মেয়র পদে নির্বাচন না করলেও দলটির মাঠ পর্যায়ের অনেক নেতা কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করবেন। তাদের যুক্তি স্থানীয় নির্বাচনে এলাকা ভিত্তিক অবস্থার ধরে রাখতে তারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যেয়ে নির্বাচন করবেন। বিশেষ করে কয়েকটি ওয়ার্ডে বর্তমান এবং সাবেক কয়েকজন জনপ্রিয় কাউন্সিলর রয়েছেন। তারাও আছেন দোটানায়। 

আরো পড়ুন:

একদিকে দলের নির্দেশনা উপেক্ষা করায় বিএনপির এসব কাউন্সিলর প্রর্থীদের পক্ষে যেমন ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে, তেমনি স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধির চেয়ারটি রক্ষা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় আবার ক্ষমতাসীন দল এবার কাউন্সিলর পদে উন্মুক্ত করতে পারে, এমনটি শোনা যাচ্ছে। ফলে ওয়ার্ড পর্যায়ে একাধিক প্রার্থী হতে পারেন আওয়ামী লীগের। সে ক্ষেত্রে মেয়র পদে নির্বাচনে তেমন প্রচারণা না হলেও কাউন্সিলর পদে উত্তাপ ছড়াতে পারে। 

এদিকে, কেসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও মেয়র পদে এখন পর্যন্ত বিএনপি’র কোনো নেতার পক্ষে প্রার্থীতার বার্তা আসেনি। তবে মাঠে রয়েছেন জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, সাম্যবাদী দলসহ বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

তফসিল অনুযায়ী, খুলনা সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৬ মে, বাছাই ১৮ মে, প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ মে ও ভোট ১২ জুন।

ইতোমধ্যে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পরিবহন মালিক নেতা সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গফ্ফার বিশ্বাস, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মহানগর সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির ও নগর সভাপতি মাওলানা আব্দুল আউয়াল, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের খুলনা জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য প্রকৌশলী সৈয়দ কামরুল ইসলাম, সাবেক বিএনপি ও জাপা নেতা এস এম মুশফিকুর রহমান মুশফিক, আগুয়ান-৭১ এর প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় আহবায়ক মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

বিএনপি দলগতভাবে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় খুলনায় আওয়ামী লীগ বিরোধী ভোটের দিকে তাকিয়ে আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্ভাব্য প্রার্থীরা ওয়াজ মাহফিল এবং ঈদসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে রমজানে বিভিন্ন ইফতার অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন মসজিদে তারাবি ও জুমার নামাজে হাজির হয়ে দোয়া প্রার্থনা করেছেন তারা।

নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে নগর আওয়ামী লীগর সভাপতি ও দলীয় মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, অনেক আগে থেকেই আমি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। গতকাল সোমবার রাতে নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ঈদ পরবর্তী এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে।
 
মহানগর বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বলেন, সিটি নির্বাচনে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই আমাদের। আমরা এখন আন্দোলনে আছি। এসব নির্বাচন নিয়ে ভাবছি না। আমাদের কথা স্পষ্ট আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে তারপর এসব স্থানীয় নির্বাচন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেয়র প্রার্থী ও ইসলামী আন্দোলনের মহানগর সভাপতি মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, বর্তমান দেশের সিংহভাগ মানুষের দাবি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয়ভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচন জাতীয় সরকারের অধীনে করার দাবি করে আসছে। সে অনুযায়ী তাদের কর্মসূচিও রয়েছে। তবে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনটি স্থানীয় নির্বাচন। স্থানীয় নির্বাচনটিও জাতীয় নির্বাচনের আন্দোলনের অংশ হিসেবে গ্রহণ করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। 

মেয়র প্রার্থী ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য প্রকৌশলী সৈয়দ কামরুল ইসলাম বলেন, খুলনা নগরীর ট্রাফিক জটমুক্ত, দুর্নীতি, উন্নততর সড়ক, নগরবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবো। 

মেয়র প্রার্থী ও আগুয়ান-৭১ এর প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় আহবায়ক মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী বলেন, নগরবাসীর অধিকারগুলোকে পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আগুয়ান-৭১ এর তরুণরা রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তরুণদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান খুলনার রাজনীতিতে এক নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন করবে।

স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এস এম মুশফিকুর রহমান বলেন, খুলনা সিটিকে উন্নয়নের মডেল বলে কেউ কেউ। কিন্তু আসলে কি সঠিক উন্নয়ন হয়েছে? এ প্রশ্ন আজ হাজারও মানুষের।  

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়