ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নবজাতককে বিক্রির অভিযোগ

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৫, ২৫ মে ২০২৩   আপডেট: ১৩:০৭, ২৫ মে ২০২৩
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নবজাতককে বিক্রির অভিযোগ

গাজীপুরের শ্রীপুরে হাসপাতালের খরচ দিতে না পারায় প্রিয়া আক্তার (২২) নামের এক প্রসূতির সদ্য ভূমিষ্ঠ কন্যাসন্তানকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বুধবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হলে এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

ভুক্তভোগী প্রিয়া আক্তার ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার মালিডাঙ্গা গ্রামের মো. রাসেল মিয়ার স্ত্রী। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার শ্রীপুর গ্রামের কাপাসিয়া সড়কের পাশে বাবুল সরকারের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত রোববার প্রিয়া সিজারের মাধ্যমে একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন। পরদিন সোমবার প্রিয়ার কাছ থেকে কাগজে টিপসই নিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া হয় বাচ্চাটিকে। পরে অজ্ঞাত কোনো এক ব্যক্তির হাতে নবজাতককে তুলে দেন চিকিৎসক পরিচয় দেওয়া জাহাঙ্গীর। তবে কার কাছে তাঁদের সন্তানকে তুলে দেওয়া হয়েছে, জানতে পারেননি প্রিয়া-রাসেল দম্পতি। পরে জাহাঙ্গীর প্রিয়াকে ১৪ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে জানান, নবজাতকের জন্য ৩০ হাজার টাকা পেয়েছেন। তা থেকে ১৬ হাজার টাকা হাসপাতালের বিল কেটে রেখেছেন।

প্রিয়া আক্তার জানান, তাঁর স্বামী একজন দিনমজুর। তার সংসারে দেড় বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। গত রোববার প্রসবব্যথা নিয়ে শ্রীপুর চৌরাস্তার নিউ এশিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান। সেখানে জাহাঙ্গীর আলম নামে একজন নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে জানান, দ্রুত সিজার না করলে মা ও সন্তান দুজনেরই সমস্যা হবে। অপারেশন করতে ১৫-১৬ হাজার টাকা লাগবে বলেও জানান জাহাঙ্গীর।

তিনি আরও জানান, আমার স্বামী চেষ্টা করেও টাকা জোগাড় করতে পারেনি। পরে জাহাঙ্গীর আমাকে প্রস্তাব দেন বাচ্চাকে তার কথামতো তুলে দিলে নগদ টাকা দেবে। ছেলে হলে ৫০ হাজার, মেয়ে হলে ৩০ হাজার টাকা। হাসপাতালের বিলও লাগবে না। পরে আমরা রাজি হই।

নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দেওয়া অভিযুক্ত ম্যানেজার কাম পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর সন্তান বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘রাসেল দম্পতি নিজেরাই তাদের সন্তান দত্তক দিয়েছেন।’

এ বিষয়ে হাসপাতালের মালিক মো. ফজলুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে দাবি করেন।

এদিকে, ঘটনার বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানান তিনি।

রফিক/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়