খ্যাতি হারাচ্ছে নরসিংদীর রাবানের আনারস

স্বাদ ও গুণগত মানে দেশজুড়ে কদর রয়েছে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার রাবানের মিষ্টি ঘোড়াশাল জাতের আনারসের। কিন্তু চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টির কারণে ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে এই খ্যাতি নষ্ট করছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা বেনামী জাতের আনারস। এতে সাধারণ কৃষক বিপাকে পড়েছে। 

অন্য বছর ভালো আবাদ হলেও এ বছর বৃষ্টি না হওয়াতে চাষিদের মাথায় হাত উঠেছে।

নরসিংদী কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকা ও জিনারদী ইউনিয়নের রাবান, কুড়াইতলী, ছয়ধরিয়া, বড়িবাড়ি, কাটাবের, বরাব, ধলাদিয়া, গোপি রায়ের পাড়া, লেবুপাড়া, সাতটিকা ও চরনগরদী এলাকার প্রায় ১ হাজার বিঘা জমিতে ঘোড়াশাল জাতের আনারসের চাষ করা হয়। প্রতি বিঘা জমিতে আনারস চাষে ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচের বিপরীতে বিক্রি হয় প্রায় লাখ টাকা। ফলে এই এলাকার কৃষকের প্রধান অর্থকরী ফসল হয়ে দাঁড়িয়েছে এই আনারস। তবে চলতি মৌসুমে সঠিক সময় বৃষ্টি না হওয়ায় ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি আনারস আকারে ছোট হয়েছে। 

উপজেলার আনারস চাষিরা বলেন, দেশে এখানকার আনারসের সুনাম রয়েছে। দেশীয় প্রজাতির এ আনারসের পুষ্টিগত মান ও রসে টসটসে হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা ব্যাপক। সম্প্রতি ঠিকমতো বৃষ্টি না হওয়াতে জমির মাটি শুকিয়ে গেছে। পর্যন্ত পানি না পাওয়ার কারণে জমির মধ্যে আমারস নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি রাবানের আনারসের খ্যাতি নষ্ট করতে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী দূর-দূরান্ত থেকে বেনামী জাতের আনারস এনে রাবানের বলে বাজারে বিক্রি করছে। ফলে একদিকে যেমন রাবানের আনারসের খ্যাতি নষ্ট হচ্ছে, অপরদিকে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চাষিরা। 

পলাশ উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা শিখা রায় বলেন, ‘এ বছর পলাশে ১৪৫ হেক্টর জমিতে ঘোড়াশাল জাত আনারসের আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১০-১২ টন ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের অনাবাদী জমিতে আনারস চাষ বৃদ্ধি করার পরামার্শ দিয়ে যাচ্ছি। বেনামি আনারস যেন রাবানের আনারসের খ্যাতি নষ্ট করতে না পারে, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’  

বৃষ্টি না হওয়ার কারণে চাষিদের যে ক্ষতি হচ্ছে, সেই ক্ষতিপূরণ কীভাবে করা যায়, সেটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে এই কর্মকর্তা।