ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

চুরি হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর মায়ের কোলে ফিরল শিশু

নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০৩, ১০ জুন ২০২৩   আপডেট: ২১:১৭, ১০ জুন ২০২৩
চুরি হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর মায়ের কোলে ফিরল শিশু

নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া শিশুকে ২৪ ঘণ্টা পর তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শনিবার (১০ জুন) দুপুরে তিন দিন বয়সী ওই শিশুকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

এর আগে, সকালে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগর এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় দুই নারীকে আটক করে পুলিশ।

চুরি হওয়া শিশুটি নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা ইউনিয়নের মহিষডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মো. মাহফুজুর রহমান ও হাসনা হেনা দম্পতির প্রথম সন্তান।

হাসনা হেনা বলেন, ‘আমার একমাত্র সন্তানকে ফিরে পেয়েছি। জীবনে আর কিছু চাওয়ার নেই। সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আর যারা আমার সন্তান যারা চুরি করেছিল তাদের কঠিন বিচার দাবি করছি।’

আটক ছদ্মবেশী নার্স কাজলী (৩০) শহরের চকবৈদ্যনাথ এলাকায় আরিফুল ইসলামের স্ত্রী এবং কাজলী খাতুন (৪২) কুষ্টিয়া জেলার খাজানগর এলাকার সাইফুল ইসলামের স্ত্রী।

পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান জানান, শুক্রবার দুপুরে সিভিল সার্জন মহোদয় আমাকে ফোনে শিশু চুরির বিষয়টি জানান। সঙ্গে সঙ্গে আমরা বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করি।

তিনি বলেন, ফুটেজে দেখতে পাই, নাটোর রেলস্টেশন থেকে এক শিশুকে নিয়ে এক নারী ট্রেনে উঠেন। ট্রেনটি খুলনার দিকে যাচ্ছিল। পরবর্তীতে সকল স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করি। সেখানে দেখি, শিশুটিকে নিয়ে ওই নারী পোড়াদহ স্টেশনে নামেন।

সাইফুর রহমান জানান, সেই সূত্র ধরে আমাদের পুলিশের টিম কাজ করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পোড়াদহ থানার খাজানগর এলাকা থেকে শিশুসহ কাজলী খাতুনকে আটক করে পুলিশ। পরবর্তীতে সকালে ছদ্মবেশী নার্স কাজলীকে নাটোর শহরের চকবৈদ্যনাথ এলাকা থেকে আটক করা হয়।

তিনি আরও জানান, ছদ্মবেশী নার্স কাজলী শিশুটিকে চুরি করে আট হাজার টাকায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগর এলাকার সাইফুল ইসলামের স্ত্রী কাজলী বেগমের কাছে বিক্রি করেন। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ের পর পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান শিশুটিকে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মাইনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকালে গৃহবধূ হাসনা হেনার প্রসব ব্যথা শুরু হলে দ্রুত তাকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে আনা হয়। ওই দিন দুপুরে হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি মাধ্যমে একটি কন্যা শিশুর জন্ম দেন তিনি। সারারাত রোগীর আত্মীয়রা মা ও শিশুটিকে দেখভাল করেন। শুক্রবার সকালে শিশুর দাদা ও তার মাকে হাসপাতালে রেখে বাকিরা বাড়িতে যান। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিশুটির দাদি ও মা হাসপাতালের বেডে শুয়ে ছিলেন। এ সময় অজ্ঞাত পরিচয়ের এক নার্স শিশুটিকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে দাদির কোল থেকে নিয়ে যান। মুহূর্তে শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যান অজ্ঞাত ওই নারী। এ সময় শিশুটির দাদির চিৎকারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আসেন। সবাই খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযানে নামে।

আরিফুল/কেআই

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়