ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হলো নারী সাংবাদিকের লাশ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪১, ১১ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ০৯:৪৪, ১২ মার্চ ২০২৪
গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হলো নারী সাংবাদিকের লাশ

নারী সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ পৌঁছাল গ্রামের বাড়িতে।

রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মারা যাওয়া অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। সোমবার (১১ মার্চ) রাত ১০ টার দিকে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের পারিবারিক কবরস্থানে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে রাত ৮টা ২০ মিনিটে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের  মরদেহ বাড়িতে এসে পৌঁছায়। এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তার স্বজনরা।

সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর আসল নাম বৃষ্টি খাতুন। তিনি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভে কাজ করতেন। গ্রামের বাড়িতে রাত ১০টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। গ্রামের বাড়িতে মরদেহ পৌঁছানোর পর কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। এসময় বৃষ্টির বাবা-মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন।

রাজধানীর গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মারা যাওয়া অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ ১১ দিন পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে সিআইডি। সোমবার (১১ মার্চ) বিকেল তিনটার দিকে বৃষ্টি খাতুনের বাবা সবুজ শেখের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। এর আগে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তার মরদেহ শনাক্ত করা হয়। বাবা সবুজ শেখ ওরফে শাবলুর আলম এবং মা বিউটি বেগমের দেওয়া ডিএনএ নমুনার সঙ্গে মিলেছে বৃষ্টির ডিএনএ। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম গ্রামের প‌শ্চিমপাড়ায়।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের সময় এক বন্ধুর সঙ্গে ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন অভিশ্রুতি। পরে বেইলি রোডের সেই আগুনে তিনি মারা যান। এরপর তার মরদেহ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। তার মরদেহের দুইজন দাবিদার পাওয়া যায়। কালী মন্দিরের একজন দাবি করেন; অভিশ্রুতি শাস্ত্রী সেই কালী মন্দিরে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। পরে আদালতের নির্দেশে তার বাবা-মায়ের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর তার ডিএনএ বাবা-মায়ের সঙ্গে মিলে যায় এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ও সার্টিফিকেটের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। রমনা কালী মন্দিরের পক্ষ থেকেও পুলিশকে লিখিতভাবে তাদের দাবি না থাকার বিষয়টি জানানো হয়। যেহেতু অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের ডিএনএ স্যাম্পল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে মিলে গেছে তাই তার বাবার কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ বলেন, আমি আমার মেয়ের মরদেহ ফিরে পেয়েছি। তাকে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। কারা আমার মেয়ের মরদেহ নিয়ে ষড়যন্ত্র করল আমি জানি না। যারা ষড়যন্ত্র করেছে আল্লাহ তাদের বিচার করবে ইনশাআল্লাহ।

বৃষ্টি তার বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে অভিশ্রুতি নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি মূলত মুসলিম পরিবারের সন্তান। কিন্তু অভিশ্রুতি নামে নিজেকে পরিচয় দেওয়ার কারণে তার মরদেহ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। মৃত্যুর পর রমনা মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা বৃষ্টিকে সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং সবুজ শেখ ও বিউটি বেগম নিজের সন্তান বলে দাবি করেন। ধর্ম পরিচয় নিয়ে চারদিকে শুরু হয় নানা সমালোচনা। ফলে মরদেহ হস্তান্তর আটকে দেওয়া হয়। মরদেহ শনাক্তে নেওয়া হয় ডিএনএ নমুনা।

উল্লেখ্য, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুনে ৪৬ জন নিহত হন। তাদের ৪৪ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে, অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর মরদেহের একাধিক দাবিদার থাকায় তার ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ।

কাঞ্চন/ফয়সাল

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়