ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

স্বপ্ন পূরণ হলো মেয়ের, বাবার চোখ জল টলমল 

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪২, ২৫ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১৩:৪৯, ২৫ মার্চ ২০২৪
স্বপ্ন পূরণ হলো মেয়ের, বাবার চোখ জল টলমল 

কোনো ধরনের ঘুষ ছাড়াই অভাব অনটনের সংসারে মেয়ের চাকরির খবর শুনে অনেকটাই হতবাক হলেন তার শ্রমিক বাবা শাহ আলম। লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের পাঁচ পাড়া গ্রামের বাসিন্দা তারা।

অন্যদিকে চাকরি নামের সোনার হরিণ পাওয়ায় ছোট্টবেলার স্বপ্ন পূরণ হলো দরিদ্র বাবার কন্যা জয়নবের।   

ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষা ২০২৪ এর চুড়ান্ত ফলাফলের পর এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন বাবা শাহ আলম ও মেয়ে বিবি জয়নব। 

শনিবার (২৩ মার্চ) রাত ৯টার দিকে পুলিশ লাইন্স ড্রিলশেডে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ। সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৪০ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী প্রার্থী নিয়োগ বোর্ড কর্তৃক চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়। 

নির্বাচিতদের নাম ঘোষণার সময় জেলা পুলিশ লাইন মাঠে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাদের সবাই। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে দেশের জন্য কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন তারা। ফলাফল ঘোষণার পর তাদেরকে পুলিশ সদস্য হিসেবে ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন জেলা পুলিশ কর্মকর্তারা।

জয়নবের বাবা শাহ আলম বলেন, স্ত্রী ডলি আক্তার ও ৫ মেয়েকে নিয়ে অভাব অনটনের সংসার চলছিল ৬৫ বছর বয়সী শ্রমিক শাহ আলমের। জীবনযুদ্ধে কর্মক্ষেত্রে একটি দুর্ঘটনায় পায়ে আঘাত পাওয়ার পর এখন বৃদ্ধ বয়সে বেকার তিনি। এমন প্রেক্ষপটে এসে ৪র্থ মেয়ে বিবি জয়নবের সরকারি চাকুরির খবর পেয়ে অনেকটাই আশ্চর্য হন তিনি। চোখের জল টলমলে অবস্থায় অনভূতি প্রকাশ করেন এই বাবা। প্রধানমন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

একইভাবে চাকরি হয়েছে পৌর শহরের দক্ষিণ মজুপুর এলাকার বাসিন্দা আবুল কালামের ছেলে আল আমিনের। তিনি বলেন, অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় আমার চাকরি হয়েছে, এতে আমি আনন্দিত। সঙ্গে থাকা তার ভাই খুরশিদ আলম জানান,  ৪ ভাই এর মধ্যে ছোট ভাইয়ের ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি হওয়াতে এখন আমাদের পরিবার মহা খুশি।

জানা যায়, পুলিশে চাকরি পেতে প্রার্থীদের ভিড় জমে পুলিশ লাইন্সে। সারি সারি লাইনে দাঁড় করিয়ে বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সী মোট আবেদনকারী ছিলেন ১৭৪৩ জন। তিন দিনব্যাপী (২০,২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি) চলে মাঠ পরীক্ষা (শারিরিক)। এর পর বাছাইকৃত ৩৮৪ জন অংশ নেন লিখিত পরীক্ষায়। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হন ১০০ জন। এর মধ্যে ৯৯ জন পরীক্ষার্থী মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। তাদের মধ্যে ৪০ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী চূড়ান্তভাবে মনোনিত হন। 

এদিকে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারেক বিন রশীদ বলেন, স্মার্ট পুলিশ, স্মার্ট দেশ গঠনে বদ্ধ পরিকর বাংলাদেশ পুলিশ। স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া হলো তারই অংশ, নতুন যারা নিয়োগ পেয়েছে সবাই জনসেবায় আত্ম নিয়োগে আগামীর বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।

লিটন/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়