ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি ৪ পয়েন্টে বিপৎসীমার উপরে 

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৫, ১০ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ২০:২৬, ১০ জুলাই ২০২৪
কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি ৪ পয়েন্টে বিপৎসীমার উপরে 

কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি সামান্য হ্রাস পেয়ে আবারও বাড়তে শুরু করেছে। ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারের পানি চার পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে। এতে জেলায় ৯ উপজেলার ৫৫টি ইউনিয়নের দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। চরাঞ্চলের বানভাসী মানুষ টানা ১০ দিন ধরে পানিবন্দি থাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্য সংকটে পড়েছে। 

বুধবার (১০ জুলাই) স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সন্ধ্যা ৬টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ৩৬ সেন্টিমিটার, হাতিয়া পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ তিনটি পয়েন্টে তিন ঘণ্টায় এক সেন্টিমিটার করে পানি বেড়েছে। অন্যদিকে, দুধকুমার নদীর পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আরো পড়ুন:

জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ১৬টি নদ-নদীর মধ্যে প্রধান ৪টির অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে ১০ দিন ধরে দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। অনেকের বাড়িঘরে পানি থাকায় নৌকা ও কলা গাছের ভেলায় বসবাস করছেন। অনেক পরিবার খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে। সরকারিভাবে কিছু ত্রাণ সহায়তা পৌঁছালেও বেসরকারিভাবে তেমন ত্রাণ তৎপরতা দেখা যায়নি। অনেকে ত্রাণ সহায়তা পেলেও রান্না করার সরঞ্জাম না থাকায় শুকনো খাবারের উপর নির্ভর করছে। চারণভূমি তলিয়ে থাকায় গবাদিপশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। কাঁচা ঘাস ও খড় না থাকায় তাদের গবাদিপশু নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগবতীপুরের বাসিন্দা মোমেনা বলেন, ‘গরু নিয়ে খুব কষ্টে আছি। আমরা এক বেলা খেয়ে থাকতে পারলেও পশু তো আর পারে না। মানুষের পাশাপাশি তাদেরও কষ্ট হচ্ছে।’ 

উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বালাডোবার চরের আদরী বেগম বলেন, ‘১০-১২ দিন ধরে বানের পানিতে ভাসছি। এখানে নলকূপ তলিয়ে আছে। রান্না করতে পারছি না। শুকনো খাবারও নেই। খুব কষ্টে নৌকায় ও ঘরের উচু মাচানে বসবাস করছি। পানি কমার আশায় আছি কিন্তু পানি আবার বাড়ছে।’

কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর-এ মুর্শেদ জানান, বন্যাদুর্গত এলাকায় ৮৩টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। ২০ হাজার খাবার স্যালাইন, ২০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, জেলার নদ-নদীর পানি সামান্য হ্রাস পেয়ে আবারও বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। বন্যা পুর্বাভাসের তথ্যানুযায়ী, ভারতের উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারের পানি সমতলে বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, জেলার বন্যা কবলিতদের জন্য বুধবার (১০ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত ৫৪২ মেট্রিক টন চাল, ৩২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ২৩ হাজার ১২০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ চলমান রয়েছে। 
 

বাদশাহ/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়