সাভারে নিহতের সংখ্যা অন্তত ৩১ জন
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ঢাকার সাভারে আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সোমবারের সংঘর্ষে অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন। মিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে। উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া যায়।
বেসরকারি এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, গত সোমবার সংঘর্ষের ঘটনার পর গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যুর তথ্য তাঁরা নথিভুক্ত করেছেন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন- রমজান, মোজাহিদ, নাফিসা, তৌহিদুর রহমান, সাফোয়ান, রাসেল, রফিক, নিসান, মুন্না, সজিব, রানা, আলামিন, সাজ্জাদ, লালমিয়া ও কাউয়ুম। তবে তাঁদের বয়স ও বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক মো. ইউসুফ বলেন, হাসপাতালে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৫ জন। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিসিইউ) ভর্তি ৩-৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, আশুলিয়া থানার সামনের মহাসড়কে পদচারী সেতুতে দুই ব্যক্তির মরদেহ দুই পা বেঁধে উল্টো করে ঝুলানো ছিলো। সকালে মরদেহ দুটি নিচে নামানো হয়। পিকআপে ২ জনকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। থানার সামনেও একটি লাশ পড়ে আছে। তার শরীরেও আগুন দিয়েছিলো। লাশগুলো পুলিশ সদস্যদের হতে পারে।
সংঘর্ষের সময় সাভারের পাকিজা এলাকায় শ্রাবণ গাজী (২১) নামে একজন নিহত হয়েছেন। শ্রাবণ গাজির পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি নিহত হন।
এ ঘটনায় কথা বলতে মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানসহ সাভারে দায়িত্বরত পুলিশের ঊর্ধ্বতন তিনজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে মঙ্গলবার ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান বলেছিলেন, আমাদের তিনটি থাকায় ভাঙচুর করে আগুন দেওয়া হয়েছে। লুটপাট হয়েছে। কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। সে ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়ার চেষ্টা চলছে।
সাভারে গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সমন্বয়ক গোলাম রহমান শাহজাহান বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে গত সোমবার ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। কারো মাথায় কারো পেটে গুলি লেগেছে। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় চিকিৎসাধীন আহত আর কারো মৃত্যু হয়নি।
আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপক হারুন অর রশীদ বলেন, গত সোমবার তিনজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। এর মধ্যে একজনের নাম স্বপন প্রামাণিক (২০), জাহিদুর রহমান (২৫)। অপর একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাদের শরীরে গুলি লেগেছিলো।
আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় হাবীব হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. রাসেল মিয়া বলেন, গত সোমবার বিকেলে ৫ জনের মরদেহ হাসপাতালের সামনে আনা হয়। কিছুক্ষণ পর ৪ জনের পরিবারের সদস্যরা মরদেহ সেখান থেকে নিয়ে যান। পরে ডেথ সার্টিফিকেটের জন্য অন্য কোনো হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে কিনা জানি না। তবে অজ্ঞাত একজনের মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরিফুল/ইমন