টাঙ্গাইলে পর্নোগ্রাফি মামলায় স্কুলছাত্রী গ্রেপ্তার
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় শিক্ষিকা ও ছাত্রীসহ বিভিন্নজনের ছবি ব্যবহার করে পর্নো ভিডিও বানিয়ে বিভিন্ন ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে পোস্ট করে টাকা দাবির অভিযোগে স্কুলছাত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে গ্রেপ্তার ওই স্কুল শিক্ষার্থীকে আদালতে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ। এর আগে গত রবিবার (১৯ জানুয়ারি) রাতে পূর্ব ভূঞাপুর বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার তাইবা সুলতানা মেধা উপজেলার ফলদা ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের শিক্ষক আব্দুল খালেকের মেয়ে। মেধা এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী।
ওই স্কুল ছাত্রীকে গ্রেপ্তারের খবরে কয়েকজন ভুক্তভোগী থানায় হাজির হয়। এ সময় তারা ওই ছাত্রীসহ তার অভিভাবকদেরও শাস্তি দাবি করেন।
পুলিশ জানায়, উপজেলার কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা, ছাত্রী ও ব্যক্তিদের ছবি ব্যবহার পর্নো ভিডিও তৈরি করে একাধিক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ বানিয়ে সেখানে পোস্ট করা হয়। পরে পোস্ট করা ভিডিওর সঙ্গে মোবাইল নম্বর দিয়ে লাখ লাখ টাকা চাওয়া হয়। ‘দিলরুবা’ ও ‘রাকিবুল ইসলাম’ নামের আইডি থেকে এলাকার অনেকের আইডি যুক্ত করে ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ তৈরি করে। পরে সেই গ্রুপে পর্নো ভিডিও পোস্ট করা হয়। পরে ফেসবুক, গুগল কর্তৃপক্ষের সঙ্গ যোগাযোগ করে আইডিগুলোর মালিক বা ব্যবহারকারী শনাক্ত করা হয়। এই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ভূঞাপুর পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী তাইবা সুলতানা মেধার ফোন ও ল্যাপটপ জব্দ করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে জব্দ করা ফোনে এ সব পোস্ট ও ভিডিও ছড়ানোর সত্যতা পাওয়া যায়।
গ্রেপ্তার স্কুল ছাত্রী তাইবা সুলতানা মেধা বলেন, ‘‘আমার ছবি ব্যবহার করে পর্নো ভিডিও বানানো হয়েছে। সেই ভিডিও দিয়ে আমার পরিবারের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। এ ঘটনার জড়িত মির্জাপুরের সীমান্ত ও গোপালপুরের সিফাতকে পুলিশ ডেকে এনেছিল। তারা স্বীকারও করেছেন কিন্তু তারপরও তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের কাজের সঙ্গে আমি জড়িত না, সেটার প্রমাণ আমার কাছে আছে।’’
গ্রেপ্তার স্কুল ছাত্রী মেধার বাবা আব্দুল খালেক বলেন, ‘‘আমার মেয়ের ছবি দিয়ে নগ্ন ভিডিও বানিয়ে টাকা দাবি করা হয়েছিল। যে নম্বরগুলোতে টাকা চাওয়া হয়েছিল তাদের পুলিশ ধরেছিল। তারা স্বীকারও করেছেন। সেই সময় মেয়ের মোবাইল চেক করে কিছু পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফেরত দিলেও রবিবার রাতে মেয়েকে থানায় নিয়ে যায়। সোমবার পর্নোগ্রাফি মামলায় তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এটার সঙ্গে মেয়ে জড়িত না।’’
ভূঞাপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, জি-মেইল দিয়ে একাধিক ফেসবুক আইডি খোলা হয়েছে ওই ছাত্রীর মোবাইল দিয়ে। লোকলজ্জার ভয়ে অনেকে কিছু বলতে চান না। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী একজন থানায় অভিযোগ করেন। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়। এতে গুগল, ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরে তদন্তে আইডির ব্যবহারকারীর পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পরই ওই ছাত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা/কাওছার/বকুল