ঢাকা     সোমবার   ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৩ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করলেন ২ উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৪২, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫  
তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করলেন ২ উপদেষ্টা

রবিবার বিকেলে তিস্তা নিয়ে করণীয় শীর্ষক গণশুনানি বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন ও মহাপরিকল্পনার দাবিতে হাজারো মানুষ প্ল্যাকার্ড, ব্যানার হাতে নিয়ে অংশ নিয়েছেন গণশুনানিতে। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রংপুরের কাউনিয়া রেলব্রিজ সংলগ্ন তিস্তার পূর্ব পাড়ে আয়োজিত শুনানিতে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। দুই উপদেষ্টা তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের দুর্বল পররাষ্ট্র নীতির কারণে তিস্তা চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি। এবার ভারতের সঙ্গে চুক্তি বাস্তবায়নে শক্ত কূটনৈতিক তৎপরতা নেওয়া হবে।”

আরো পড়ুন:

তিনি আরো বলেন, ‍“তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে একটি খসড়া নিয়ে বাংলাদেশ ২০১১ সাল থেকে ঘুরে বেড়িয়েছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ দাবি আদায় তো করতে পারেনি, অধিকার আদায়ের কথাও বলতে পারেনি, তারা শুধু ভারতের সঙ্গে ছবি তুলেছে। তিস্তার অধিকার আদায়ে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে আওয়ামী লীগ।”

“অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মাথা উঁচু করে এবার অধিকার আদায় করবে। তিস্তা ইস্যুতে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আইনের চাপ প্রয়োগ করা হবে। যতটা সম্ভব উন্নয়ন এবং তিস্তা পাড়ের মানুষের চাওয়া পূরণ করব। তিস্তা সংকট চিরতরে নিরসন করা হবে” যোগ করেন তিনি।

তিস্তা পাড়ের মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “নদী ভাঙন, বন্যা ও খরার কারণে এখানকার মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। আপাতত তিস্তার ৪৫ কিলোমিটার এলাকা বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ভাঙন রোধের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মহাপরিকল্পনার চূড়ান্ত রূপরেখা নির্ভর করবে স্থানীয়দের চাহিদার ওপর।”

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান


তিনি বলেন, “চলতি বছরের ডিসেম্বরের দিকে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। তবে, তার আগে চায়না পাওয়ার প্রকল্প ও পানি উন্নয়ন বোর্ড যৌথভাবে সরেজমিন পরিদর্শন করবে। তারা স্থানীয় ভুক্তভোগীদের মতামত মূল্যায়ন করবেন। এর ভিত্তিতে রূপরেখা চূড়ান্ত হবে।” 

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “দেশীয় পরিকল্পনার অংশ হিসেবে টেন্ডারের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন কবলিত ৪৫ কিলোমিটার চিহ্নিত করবে। ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ও ব্লক দিয়ে কাজ শুরু করা হবে। যার ফলে আগামী বন্যায় ভাঙন থেকে নদী পাড়ের মানুষ কিছুটা হলেও রেহাই পাবেন বলে আশা করছি।”

গণশুনানিতে উপস্থিত হয়ে উম্মুক্ত আলোচনায় তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা জানান, বছরের পর বছর তারা ভয়াবহ বন্যা, নদী ভাঙন ও পানি সংকটে বিপর্যস্ত। বর্ষাকালে ভারত একতরফাভাবে পানি ছেড়ে দেয়, আর শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রত্যাহার করে নেয় ফলে চাষাবাদ ও জীবিকা চরম হুমকির মুখে পড়ে। তারা দ্রুত তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন ও দীর্ঘমেয়াদী মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান।

এর আগে, গণশুনানিতে অংশ নিতে তিস্তা রেল ব্রিজের নিচে দুপুর থেকেই জড়ো হতে থাকেন উত্তরের নদী পাড়ের চার জেলার মানুষ। গণশুনানি বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলে।

ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়