ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

পোশাক শ্রমিককে হত্যার পর লাশে আগুন দিয়ে পালিয়েছে স্বামী

সাভার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪১, ২০ এপ্রিল ২০২৫  
পোশাক শ্রমিককে হত্যার পর লাশে আগুন দিয়ে পালিয়েছে স্বামী

ঢাকার আশুলিয়ায় রোকসানা আক্তার (২৮) নামের এক পোশাক শ্রমিককে হত্যার পর আগুন দিয়ে লাশ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করেছেন তার স্বামী। খবর পেয়ে সেই লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

রবিবার (২০ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ি এলাকায় কালাম মাদবরের মালিকানাধীন ৫ তলা ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাটে রোকসানা আক্তারকে হত্যা করা হয়। এর পর থেকে পলাতক আছেন ওই নারীর স্বামী।

রোকসানা আক্তার শেরপুরের মো. আব্দুর রশিদের মেয়ে। তিনি আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় ন্যাচারাল ইনডিগো লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানায় অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। রোকসানার স্বামীর পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তার পেশা সম্পর্কেও বাড়ির মালিক কিংবা প্রতিবেশীরা নিশ্চিত করতে পারেননি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি বাস কিংবা ভেকু (এক্সকেভেটর) কন্ট্রাকটর হিসেবে কাজ করেন।

বাড়ির মালিক কালাম মাদবর বলেছেন, ফজরের আগে ঘুম থেকে উঠে গন্ধ পেয়ে নিচতলায় নেমে দেখি, সবগুলো ফ্ল্যাটের ছিটকিনি বাইরে থেকে বন্ধ করা। রোকসানার ফ্ল্যাটের দরজা খুলতেই দেখা যায়, ঘরের ভেতর ধোঁয়া। তখন প্রতিবেশীরা এসে পানি ছিটিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। পরে পেঁচিয়ে রাখা তোষক সরাতেই বের হয়ে আসে রোকসানা আক্তারের মরদেহ। তার বিছানায় রক্তের দাগ ও গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। 

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, পাঁচ বছর ধরে রোকসানার কাছে আসেন না তার স্বামী। হঠাৎ করে তিন দিন আগে বাসায় আসলে রোকসানা আক্তার তাকে ঘরে ঢুকতে দিতে চাননি। স্বামী জানান, দুর্ঘটনায় তিনি আহত হয়েছেন, মাথা ফেটে গেছে। ঘরে ঢোকার জন্য কাকুতি-মিনতি করতে থাকেন তিনি। পরে বাড়ির মালিক ও অন্যরা রোকসানাকে বুঝিয়ে রাজি করেন। স্বামী পাঁচ বছর ধরে রোকসানার খোঁজ নেননি, ভরণ-পোষণের খরচও দিতেন না। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ চলছিল। 

আশুলিয়া থানা পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহতের স্বামী মাদকাসক্ত এবং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে কলহ চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে, দাম্পত্য কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন স্বামী। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী পলাতক আছেন।

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, হত্যার পর রোকসানার লাশ পুড়িয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন স্বামী। আগুনের নাটক সাজিয়ে ঘটনা অন্যদিকে প্রভাবিত করতে চেয়েছিলেন হত্যাকারী। আমরা তদন্ত করছি। পুলিশ কাজ করছে। মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রোকসানার স্বামীকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

ঢাকা/সাব্বির/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়