ঢাকা     শনিবার   ১৭ মে ২০২৫ ||  জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩২

‘তোর মা এখান থেকে না গেলে তোকে খুন করব’

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫০, ৯ মে ২০২৫  
‘তোর মা এখান থেকে না গেলে তোকে খুন করব’

নিহত এএসপি পলাশ সাহার মা আরতি সাহা

“বাসায় আসলেই আমাকে ধরে, অনেক ভাউচার দেয় এটা দিলি না, ওটা দিলে না। প্রতিদিনই একই কথা বলে আমাকে শেষ করে দিচ্ছে। তোর মা এখান থেকে যায় না ক্যা? তোর মা এখান থেকে না গেলে তোকে খুন করব।” এভাবেই কেঁদে কেঁদে কথাগুলো বলেছিলেন নিহত ছেলে পলাশ সাহার মা আরতী সাহা।

তিনি বলেন, “ছেলের সংসারে এভাবে আড়াই বছর ধরে অশান্তি চলে আসছিল। গত পরশু দিন পলাশ আমার সাথে কথা বলার সময় এসব কথা জানায়। আমার সাথেই কথা বললেই ফেসবুকে লিখে দেয়- মার সাথে কি কথা বলেছিস, আমাকে বলতে হবে। এভাবেই সংসারে অশান্তি করে আসছিল পলাশের স্ত্রী।”

চট্টগ্রামে র‌্যাব-৭ এ কর্মরত সিনিয়র এএসপি পলাশ সাহার মরদেহ গ্রামের বাড়ী গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তাড়াশী গ্রামে নেওয়া হলে স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে আকাশ বাতাস।

সেসময় পলাশের মা আরো বলেন, “তোরা আমার বাবার কাছে নিয়ে যা, আমি আমার বাবাকে একটু দেখবো। কি এমন রাগ করে আমাকে ছেড়ে চলে গেলি!”

গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে র‌্যাবের পাহারায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে সিনিয়র এএসপি পলাশ সাহার মরদেহ নিয়ে আসা হয় গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তাড়াশী গ্রামে। অ্যাম্বুলেন্স থেকে মরদেহ বের করার পর রাখা হয় উঠানে। এসময় স্বজনদের আহাজারীতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। পলাশকে এক নজর দেখতে আসা লোকজনেরও চোখ ভারী হয়ে ওঠে। পলাশের মা কান্নার মধ্যে বার বার ছেলের বউয়ের নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। 

দুপুরে উপজেলার পারকোনা শ্মাশানে তার মরদেহের শেষকৃত্য করা হয়। এর আগে র‌্যাব-৬ এর পক্ষ থেকে পলাশের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

এর আগে বুধবার (৭ মে) দুপুর সাড়ে ১২ টায় র‌্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পের তৃতীয় তলা থেকে সিনিয়র এএসপি পলাশ সাহার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। 

ওই চিরকুটে উল্লেখ করা হয়, ‘‘আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ কেউ দায়ী না। আমিই দায়ী। কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না। বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের ওপর। তারা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে যা আছে তা মায়ের জন্য। দিদি যেন কো-অর্ডিনেট করে।”

ঢাকা/বাদল/এস


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়