ঢাকা     শনিবার   ১৭ মে ২০২৫ ||  জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩২

আন্দোলনে অংশ না নিয়েও ‘জুলাইযোদ্ধা’, প্রতিবাদ করায় কুপিয়ে জখম

নরসিংদী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০০, ৯ মে ২০২৫   আপডেট: ১৮:১৩, ৯ মে ২০২৫
আন্দোলনে অংশ না নিয়েও ‘জুলাইযোদ্ধা’, প্রতিবাদ করায় কুপিয়ে জখম

মিনহাজুর রহমান। ফাইল ফটো

নরসিংদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় এক কলেজছাত্রকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। আওয়ামী মহিলা লীগের সাবেক এক নেত্রীর মেয়ের নাম জুলাইযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদ করায় তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিবাগত রাতে নরসিংদী শহরের বিলাসদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী মিনহাজুর রহমান (১৭) নরসিংদী সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। সে শহরের বাসাইল এলাকার মানিক মিয়ার ছেলে।

অভিযুক্ত শাহ আলম জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইভা আলমের স্বামী। তিনি সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিব। শাহ আলম, তার ভাই শাহেদ হোসেনসহ অন্তত ২০ জন হামলা করেন বলে অভিযোগ। তারা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

আহত শিক্ষার্থীর সহপাঠী ও স্বজনেরা জানান, ৫ আগস্টের পর জুলাই আন্দোলনে আহতদের তালিকা প্রস্তুতের সময় আন্দোলনে অংশ না নিয়েও ইভা আলম ও শাহ আলম দম্পতির কন্যা রাইসা আলমের নাম জুলাইযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়। এরপর মিনহাজুরসহ নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জুলাইযোদ্ধাদের তালিকায় আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারের দোসরদের তালিকাভুক্তি ও প্রকৃত যোদ্ধাদের নাম না আসার প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করেন। সম্প্রতি বিষয়টি আলোচনায় আসলে জুলাইযোদ্ধাদের অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে আহত হিসেবে রাইসা আলম অনুদান পাননি। এরপর থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করা শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়ে আসছিল ইভা আলম ও শাহ আলম দম্পতির পরিবার।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিতে বন্ধুকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে নিজ বাড়ি ফেরার পথে শাহ আলম ও তার ভাই শাহেদ হোসেন দলবল নিয়ে মিনহাজুর রহমানের ওপর হামলা করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং জুলাইযোদ্ধা সাজিদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘মিনহাজুর রহমানসহ আমরা জুলাই আন্দোলনে অংশ নিলেও রাইসা আলম জুলাই আন্দোলনে অংশ নেয়নি। তবু, তার নাম জুলাইযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে যেকোনোভাবে। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত করার জন্য আবেদন করেছি মাত্র। এরপর থেকে আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। গত রাতে আমাদের সহপাঠী এবং জুলাই আন্দোলনের সহযোদ্ধা মিনহাজুরকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা।’’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে শাহ আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

নরসিংদী মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নজরুল বলেন, ‘‘এ ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’

ঢাকা/হৃদয়/রাজীব


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়