ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বৃষ্টির মধ্যেই সড়কে পিচ ঢালাইয়ের অভিযোগ

শরীয়তপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৭, ২৫ মে ২০২৫   আপডেট: ২০:৫৯, ২৫ মে ২০২৫
বৃষ্টির মধ্যেই সড়কে পিচ ঢালাইয়ের অভিযোগ

একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে সড়কে চলছে পিচ ঢালায়ের কাজ। বৃষ্টিতে সড়কে দেওয়া প্রাইমকোট (বিটুমিনের আস্তরণ) ধুয়ে গেলেও, সেদিকে কোনো দৃষ্টি নেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। এভাবেই শরীয়তপুরের একটি গ্রামীণ সড়কে কাজ চলছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। তাদের ভাষ্য, নয়-ছয়ভাবে কাজ করলে সড়কটি মজবুত হবে না।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি নিয়ম মেনেই কাজ করছেন তারা। বিষয়টি অবগত হয়ে রোদ না ওঠা পর্যন্ত কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী।

আরো পড়ুন:

এলজিইডি সূত্র জানায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের চর সোনামুখী দাড়িয়া বাড়ি থেকে পশ্চিম সোনামুখী পর্যন্ত ১ হাজার ৮০০ মিটার সড়ক সংস্কার করার জন্য ৮৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় এলজিইডি। রাজিব হোসেন নামে স্থানীয় এক ঠিকাদার কাজটি করছেন। 

এলাকাবাসী জানান, সড়কটিতে শুরু থেকেই অনিয়ম করে আসছেন ঠিকাদারের লোকজন। সড়কের দুই পাশের (এজিং) কিছু স্থান এবং খোয়ায় নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে পিচ ঢালাইয়ের জন্য সড়কে প্রাইমকোট দেওয়া হয়। তবে, তা বৃষ্টিতে ধুয়ে গেলেও নতুন করে আর প্রাইমকোট দেওয়া হয়নি। গত দুইদিন শনিবার ও রবিবার (২৫ মে) সকালে বৃষ্টির মধ্যেই সড়কে পিচ ঢালাইয়ের কাজ হয়েছে। যে কারণে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।  

রবিবার সকাল ৭টা বেজে ২০ মিনিটে গিয়ে দেখা যায়, আধা ঘণ্টা আগে শুরু হওয়া বৃষ্টির মধ্যেই চলছে সড়কে পিচ ঢালাইয়ের কাজ। শ্রমিকরা বৃষ্টিতে ভিজে কাজ চালু রেখেছেন। সড়কের পাশে জমে থাকা বৃষ্টির পানি বেলচার সাহায্যে সরিয়ে নিতে দেখা যায় তাদের। এরপর সেই স্থানেই পিচ দিচ্ছিলেন তারা।  

স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাড়িয়া বলেন, “গত দুইদিন ধরে সকালে বৃষ্টি হচ্ছে। শ্রমিকরা বৃষ্টির পানিতে ভিজে সড়কে পিচ দেওয়ার কাজ করেছেন। বৃষ্টিতে প্রাইমকোট ধুয়ে গেলেও সেই অবস্থায় কাজ করা হচ্ছে। এসময় অনেক জায়গায় রাস্তায় জল জমে ছিল।”

তিনি বলেন, “এভাবে যদি অনিয়ম করে সড়কের কাজ করা হয়, তাহলে এই সড়ক বেশিদিন টিকবে না। আমরা চাই, বৃষ্টির মধ্যে কাজ বন্ধ রেখে নতুন করে প্রাইমকোট দিয়ে আবার খরার মধ্যে কাজ করা হোক।”

স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল কুলু বলেন, “রাস্তায় দুই পাশে আর খোয়ার কাজে পচা ইট ব্যবহার করেছে ঠিকাদার। তখন আমাদের অনেকেই বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তারা আমাদের কথা শোনেনি।”

তিনি বলেন, “গত দুইদিন ধরে সকালে বৃষ্টির মধ্যে সড়ক পিচ ঢালাইয়ের কাজ করেছেন তারা। অনেক জায়গায় তো পানি জমে ছিল। এভাবে নয়-ছয়ভাবে কাজ করলে আমাদের এই সড়কটি মজবুত হবে না।” 

ঘটনাস্থলে দায়িত্বে থাকা সদর উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের কার্যসহকারী শরীয়তউল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। একপর্যায়ে তিনি সেখান থেকে চলে যান। পরবর্তীতে তিনি কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন শ্রমিকদের।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিষয়টি অস্বীকার করে ঠিকাদার রাজিব হোসেন বলেন, “বৃষ্টির মধ্যে কোনো কাজ হয়নি। যেটুকু সময় কাজ হয়েছে তা নিয়ম মেনেই হয়েছে।” 

শরীয়তপুর জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রাফেউল ইসলাম বলেন, “বৃষ্টির মধ্যে কাজ করলে সেটি টেকসই হবে না। আমরা খবর পেয়ে ঠিকাদারকে কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। রোদ না ওঠা পর্যন্ত কাজ চালু করা যাবে না। আগের কাজ সংশোধন শেষে নতুন কাজ করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।”

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়