কুষ্টিয়ার খোকসায় গুলির পর যুবককে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
পুলিশকে ঘটনাস্থল দেখাচ্ছেন আহত হাসানের বাবা লোকমান মন্ডল।
কুষ্টিয়ার খোকসায় পূর্ব বিরোধের জেরে এক যুবককে গুলি করার পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হাসান (৩৮) নামে এক যুবককে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
বুধবার (২ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার পর উপজেলা সদরের পৌর এলাকার পাতেলডাঙ্গী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত হাসান পাতিলডাঙ্গী গ্রামের লোকমান মন্ডলের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ঠিকাদার।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পাতেলডাঙ্গী গ্রামের রাস্তায় হাসানকে (৩৮) লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হাসান রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায় সন্ত্রাসীরা। ৫-৬ জন সন্ত্রাসী এ হামলায় অংশ নেয়।
গুলির শব্দ ও আহতে যুবকের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। পরে রাতেই তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল এবং তারপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতারে স্থানান্তর করা হয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, থানা থেকে ঘটনাস্থল দেড় কিলোমিটার দূরত্ব হলেও পুলিশ পৌঁছায় কয়েক ঘণ্টা পরে।
আহত যুবক হাসানের বাবা লোকমান হোসেন পুলিশের সামনেই গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, সন্ত্রাসী রাজন ও জনি তার ছেলেকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। তারাই হাসানকে প্রথমে গুলি করে এবং পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জানান, রাতে তার ছেলে বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তার ছেলের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাসীরা দুই রাউন্ড গুলি চালায় এবং তার ছেলে হাসান গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তার উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। গ্রামবাসী এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পশ্চিমের মাঠ নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
তিনি আরো জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তার জমি থেকে এলাকার এক শীর্ষ সন্ত্রাসী ও বাহিনী প্রধানের দেহরক্ষি জনির বাবা জাহিদকে ঘাস কাটাতে বাধ দেয় হাসান। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষই থানায় অভিযোগ করে। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজে তদন্ত করে বিচার করবেন বলে জানায়। এরপর থেকে সন্ত্রাসী জনি ও তার মদতদাতারা হাসানকে হত্যার হুমকী দিয়ে আসছিল।
তিনি ছেলের উপর হামলাকারীদের বিচারের দাবি করেন। একইসঙ্গে তিনি মামলা করবেন বলেও জানান।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম আগের ঘটনায় থানায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, “দুই পক্ষই তাদের ওই অভিযোগ ফেরত নিয়েছিলেন।”
তিনি বলেন, “সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান রাজন ও তার দেহরক্ষি জনির বিরুদ্ধে এক সংখ্যালঘু পরিবারের কাছে চাঁদা দাবি ও দোকান ঘর দখল করে নেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা আছে। এর আগে, অন্য একটি সন্ত্রাসী ঘটনায় জনির বাবা জাহিদকে আটক করা হয়েছিল।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মেহেদী