শিল্পকলার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ করলেন কালচারাল কর্মকর্তা
বরিশাল সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল কর্মকর্তা অসিত বরণ দাশগুপ্ত।
বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রেখেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে কালচারাল কর্মকর্তা অসিত বরণ দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে। এতে বরিশালের সহস্রাধিক শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক চর্চা বঞ্চিত হচ্ছে।
শিল্পকলার প্রশিক্ষকদের সঙ্গে এই কর্মকর্তার (অসিত) ব্যক্তিগত মতানৈক্য হওয়ায় সরকার নির্ধারিত কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। তবে দ্রুত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগ।
তথ্যমতে, চলতি বছরের গত ৩০ জুন জেলা কালচারাল কর্মকর্তা অসিত বরণ দাশগুপ্ত স্বাক্ষরিত নোটিশে সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয়, সাময়িক সময়ের জন্য এ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে কবে নাগাদ পুনরায় চালু হবে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।
প্রশিক্ষকদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কালচারাল কর্মকর্তা হাসানুর রশীদ শিল্পকলায় নিযুক্ত ১২ জন প্রশিক্ষকের ২০২৪-২৫ সালের চুক্তিনামা নবায়ন করে যেতে পারেননি। তবে প্রশিক্ষকরা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন। নবায়নের জন্য কয়েক দফায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দ্বারস্থ হয়েছেন ভূক্তভোগী প্রশিক্ষকরা।
এরই মধ্যে বর্তমান কালচারাল কর্মকর্তা অসিত বরণ দাশগুপ্ত ১২ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর চুক্তি নবায়নের জন্য তাকেও অনুরোধ করেন প্রশিক্ষকরা। এর মধ্যেই ৩০ জুন নোটিশ দিয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন তিনি।
প্রশিক্ষকদের আরো অভিযোগ, কালচারাল কর্মকর্তা অসিত তার পছন্দের ব্যক্তিদের প্রশিক্ষক হিসেবে চুক্তিবদ্ধ করতেই তাদের বাদ দিচ্ছেন। কালচারাল কর্মকর্তা ব্যক্তি পছন্দের এমন কয়েকজন লোক শিল্পকলায় রাখেন, যারা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন।
এসব ঘটনার প্রতিকার চেয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলার মহাপরিচালকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত প্রশিক্ষক মৈত্রী ঘরাই, সাধারণ সঙ্গীত প্রশিক্ষক রিমি সাব্বির ও রফিকুল ইসলাম, রবীন্দ্র সঙ্গীত প্রশিক্ষক দেলোয়ারা ইনু, উচ্চাঙ্গ নৃত্য প্রশিক্ষক জয়ন্তী রায়, সাধারণ নৃত্য প্রশিক্ষক রাণী গোমেজ, চারুকলা প্রশিক্ষক সৈয়দ নাজমুল আলম, নাটক ও আবৃত্তি প্রশিক্ষক অনিমেশ সাহা, তালযন্ত্র প্রশিক্ষক গণেশ চন্দ্র রায়, ললিত কুমার দাস, সুশান্ত কুমার সাহা ও নিক্কন বিশ্বাস।
প্রশিক্ষণার্থীরা জানান, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তারা বিপাকে পড়েছেন। নিয়মিত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনার দাবি তাদের।
প্রশিক্ষণ বন্ধের বিষয়ে জানতে বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল কর্মকর্তা অসিত বরণ দাশগুপ্তের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি।
তবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক এএফএম নূরুর রহমান বলেন, “প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ রাখলে প্রশিক্ষণার্থীরা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিরুৎসাহিত হবেন। দ্রুত সময়ে কার্যক্রম শুরুর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।”
ঢাকা/পলাশ/মেহেদী