আসামিকে মারধর, পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ আদালতের
বগুড়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
প্রতীকী ছবি
বগুড়ার সোনাতলায় গ্রেপ্তারের সময় আসামিকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আসামির অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ১৪ আগস্ট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. শারমিন খাতুন বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারকে এ নির্দেশ দেন।
মারধরের শিকার ওই আসামির নাম মো. সাইদুর রহমান তুষ্টি। তিনি সোনাতলা উপজেলার আগুনিয়াতাইড় মাষ্টার পাড়া এলাকার মো. সারোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি একটি মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। গত ২ জুলাই সাইদুর রহমানকে ওয়ারেন্টমূলে গ্রেপ্তার করে সোনাতলা থানা পুলিশ।
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. শারমিন খাতুন স্বাক্ষরিত আদেশের নথি থেকে এসব বিষয় জানা গেছে। আদেশের নথিতে ভুক্তভোগীর বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
এতে জানা যায়, ২ জুলাই সকাল ১০টার দিকে সাদা পোশাকে দুইজন এবং একজন পুলিশের পোশাক পরে সাইদুর রহমানকে বাড়ি থেকে বের করেন। সাইদুর বের হলে তাকে মারতে মারতে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশায় তোলা হয়। অটোরিকশার ভেতরেও তাকে মারধর করে ওই তিন পুলিশ সদস্য।
সাইদুর রহমানকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর ওই তিন পুলিশ সদস্যসহ ডিউটি অফিসার এএসআই মিজান বারান্দায় নিয়ে আরো একদফা মারধর করেন। আদালতে সাইদুর রহমান জানান, পুলিশ সদস্যরা হকিস্টিক দিয়ে মারধর করেন। এ সময় তার গলায় জুতা পায়ে এএসআই মিজান লাথি মারেন।
এরপর সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে থানা থেকে চালান করা হয়। এ সময় পুলিশের স্কর্ট পার্টি তাকে সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা দেওয়ার পর তারা সাইদুর রহমানকে আদালতে নিয়ে আসেন।
নথি বলছে, আসামির বক্তব্য শ্রবণ করার পর আদালতের কাছে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, অভিযোগকারী কর্তৃক আনীত অভিযোগ নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন ২০১৩ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধের আওতাভুক্ত। বিধায় একই আইনের ৯ ধারার বিধান মোতাবেক এখতিয়ার সম্পন্ন হয়ে উক্ত আইনের ৪(১) (ক) ধারার বিধান মোতাবেক তাৎক্ষনিকভাবে হলফান্তে উপর্যুক্ত বিষয়ে অভিযোগকারীর বিবৃতি গৃহীত হলো। অতঃপর আসামির শরীর পরীক্ষা করা হলো। পরীক্ষান্তে আসামীর শরীরের দুই হাতে ছেলাফুলা ও কাটা জখমের উপস্থিতি পেয়েছে আদালত।
ঘটনার প্রাথমিক সত্যতার ভিত্তিতে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল থেকে একটি মেডিকেল রিপোর্ট প্রস্তুত করে জমা দেওয়ার জন্য সাইদুর রহমানকে নির্দেশ দেওয়া হয়। আর বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারকে এ বিষয়ে একটি মামলা করার জন্য নির্দেশ দেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. শারমিন খাতুন।
এ বিষয়ে সোনাতলা থানার ওসি মিলাদুন্নবী বলেন, “ওয়ারেন্টমূলে সাইদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালত একটি নির্দেশ দিয়েছেন। সেটি আমাদের কাছে এখনো আসেনি। আসলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একই কথা বলেছেন বগুড়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আতোয়ার রহমান। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে লিখিত কিছু আমাদের কাছে এখনো আসেনি। আসলে বিস্তারিত বলা যাবে।”
ঢাকা/এনাম/মাসুদ