ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

পেটে গজ রেখে সেলাই, সাত মাস পর অপসারণ

ফেনী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২১, ২৮ আগস্ট ২০২৫  
পেটে গজ রেখে সেলাই, সাত মাস পর অপসারণ

ফেনীর আল-কেমী হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের সময় রোগীর পেটে গজ রেখেই সেলাই করে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ সাত মাস ব্যথা ও অসহনীয় কষ্টের পর বুধবার (২৭ আগস্ট) রাতে দ্বিতীয় অস্ত্রোপচারে বের করা হয় গজটি।

ভুক্তভোগীর নাম ফরিদা ইয়াসমিন (৪০)। তিনি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর এলাকার প্রবাসী মহিউদ্দিনের স্ত্রী।

আরো পড়ুন:

পরিবার জানায়, চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি ফেনী আল-কেমী হাসপাতালে ভর্তি হন ফরিদা ইয়াসমিন। সেদিন হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. তাসলিমা আকতার তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন। এ সময় রোগীর পেটে গজ রেখে সেলাই করে দেওয়া হয়। চারদিন পর তাকে ছাড়পত্র দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়।

বাড়ি ফেরার পর থেকেই ফরিদা ইয়াসমিন বিভিন্ন জটিলতায় ভুগতে থাকেন। ব্যথা কমছিল না বলে তিনি একাধিকবার ডা. তাসলিমা আকতারকে দেখান। তবে তিনি সবসময় এটিকে ‘সিজারিয়ান-জনিত ব্যথা’ উল্লেখ করে ব্যথানাশক ওষুধ দিতেন।

অবশেষে দীর্ঘদিনেও সুস্থ না হওয়ায় এক সপ্তাহ আগে ফরিদা ইয়াসমিন ফেনী জেড ইউ মডেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার পেটে অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়ে। পরে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত হয়।

বুধবার রাতে শহরের আল-বারাকা হাসপাতালে সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ আজিজ উল্ল্যাহ তার অস্ত্রোপচার করেন। এ সময় পেট থেকে প্রায় এক কেজি ওজনের এক ফুট লম্বা গজ বের করা হয়।

ভুক্তভোগীর ভাই মোহাম্মদ শাহ ফয়সাল বলেন, ‘‘এমন কাণ্ডে চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর থেকে মানুষের আস্থা উঠে যাবে। আমাদের অর্থনৈতিক বড় ক্ষতি হয়েছে, তার চেয়ে বড় কথা আমার বোন সাত মাস ভোগান্তিতে কাটিয়েছে। বোন অসুস্থ থাকায় তার স্বামীকেও প্রবাস থেকে দেশে ফিরতে হয়েছে। আমরা সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। শিগগিরই মামলা করব। আমরা ন্যায়বিচার চাই।’’

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে ডা. তাসলিমা আকতারের মোবাইলে ব্যবহৃত নম্বরে একাধিকবার কল করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ফেনী আল-কেমী হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মান্নান বলেন, ‘‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ বিষয়ে আমরা অভ্যন্তরীণভাবে বসে আলোচনা করব। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম বলেন, ‘‘ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগের পর আমরা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

ঢাকা/শাহাব/রাজীব

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়