চট্টগ্রামের অনন্যা আবাসিক যেন এক টুকরো সাদা স্বর্গ!
রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম
চট্টগ্রামের অনন্যা আবাসিক এলাকায় সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে কাশফুল
চট্টগ্রামের বায়েজিদ-অক্সিজেনের অনন্যা আবাসিক এলাকায় এখন যেন অন্য এক জগৎ। চারপাশে শুভ্র কাশফুলের ঢেউ। বাতাস বইলেই সেই ঢেউ নাচে, দুলে ওঠে, আর চোখে-মনে শান্তির পরশ বুলিয়ে যায়।
শরতের দুপুর কিংবা বিকেল, যে সময়ই আসা হোক, একবার এই সাদা সমুদ্রের ভেতর দাঁড়ালে মনে হয় প্রকৃতি আপনাকে থামতে বলছে। চট্টগ্রামের অনন্যা যেন এক টুকরো সাদা স্বর্গ!
চট্টগ্রাম শহরের ভিড় আর ব্যস্ততা থেকে মুক্তি খুঁজে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছেন অনন্যা আবাসিকে। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ পরিবার নিয়ে সময় কাটাচ্ছেন। কারো কাছে এই কাশফুল স্মৃতির জানালা খুলে দেয়, কারো কাছে এটি নিখাদ আনন্দ।
মুরাদপুর থেকে আসা সাবরিনা কাশফুলের ভেতর দাঁড়িয়ে হেসে বললেন, “বইয়ের পাতায় যতবার কাশফুল দেখেছি, এখানে এসে মনে হচ্ছে বাস্তবে আরও সুন্দর। মনে হয় শহরেই যেন গ্রামকে খুঁজে পেলাম।”
আগ্রাবাদ থেকে আসা মিমের কণ্ঠে ছিল বিস্ময়, “ছোটবেলায় কাশফুলের গল্প শুনতাম। কিন্তু এত বিশাল জায়গা জুড়ে এভাবে দেখব ভাবিনি কখনো। সত্যিই এক অপূর্ব দৃশ্য।”
শিশুরাও কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছে।
চান্দগাঁও থেকে আসা হাফিজ স্ত্রীর হাত ধরে হেঁটে বেড়াচ্ছিলেন কাশফুলের মাঝপথে। তিনি বললেন, “এখানে দাঁড়ালে মনে হয় পৃথিবী কিছুক্ষণের জন্য থেমে গেছে। শহুরে ক্লান্তি মুছে যায়।”
তার স্ত্রী নুসাইবা যোগ করলেন, “প্রকৃতির এই সাদামাটা সৌন্দর্য মানুষের মুখে হাসি ফোটায়। সবাই এখানে এসে যেন কিছুটা হালকা হয়ে যায়। এখানে কাশফুল দেখতে এসে অনেকেই ফুল কেটে নিয়ে যাচ্ছেন, এতে সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।”
শরৎ মানেই কাশফুল। বাংলা সাহিত্যে, কবিতায়, গানেও যার বারবার উল্লেখ আছে। তবে অনন্যায় যে দৃশ্য এখন দেখা যাচ্ছে, তা অনেকের কাছেই নতুন। যেন শহরের ভেতরে লুকিয়ে থাকা এক শরৎউৎসব।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিদিন ভিড় বাড়ছে। কাশফুলের মাঝেই গড়ে উঠছে মানুষজনের আড্ডা, গল্প, আনন্দ। তবে এই সৌন্দর্য টিকে রাখতে সচেতনতারও প্রয়োজন। প্রকৃতিকে যেমন পাওয়া যায়, তেমনি রেখে যাওয়াটাই দায়িত্ব। স্থানীয়রা কাশফুল কাউছে কেটে না নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন।
অনন্যার এই শুভ্র কাশফুল তাই শুধু চোখের আনন্দ নয়, বরং এক ধরনের মনে করিয়ে দেওয়া, প্রকৃতির কাছে ফিরলে জীবন সহজ হয়ে যায়।
ঢাকা/রেজাউল/এস