ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় বিচ্ছিন্ন মাদ্রাসা, দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২১, ২ অক্টোবর ২০২৫  
রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় বিচ্ছিন্ন মাদ্রাসা, দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায় রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার কারণে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে একটি মাদ্রাসা। ফলে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম সমস্যা দেখা দিয়েছে। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম।

দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার দাবি জানানো হলেও, কোনো সমস্যার সমাধান হয়নি। বরং গ্রামে পক্ষ-বিপক্ষের বিরোধ আরো চরমে পৌঁছেছে।

আরো পড়ুন:

জানা গেছে, উপজেলার দিগদাইড় ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রফিউল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা। গ্রামের বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম রোপ্তন নিজের অর্থে পাঁচ কাঠা জমি কিনে মাদ্রাসাটি স্থাপন করেন। এলাকাবাসীর অনুরোধে পাশেই তিনি একটি কবরস্থানও নির্মাণ করেন। শুরুতে সরু একটি রাস্তা দিয়েই শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করত, কিন্তু সম্প্রতি একটি পক্ষ সেই পথ বন্ধ করে বসতঘর তুলে সেখানে বেড়া দিয়ে ঘিরে দেয়। এতে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে মাদ্রাসাটি।

এলাকাবাসী জানায়, গ্রামের লোকজন প্রথমে রাস্তা দিতে রাজি থাকলেও এখন তারা অনীহা দেখাচ্ছে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠক হলেও কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। বরং সময়ের সঙ্গে দ্বন্দ্ব আরো চরমে উঠেছে।

মাদ্রাসার উদ্যোক্তা রফিকুল ইসলাম রোপ্তন জানান, এলাকাবাসীর উপকারের কথা ভেবেই তিনি মাদ্রাসা ও কবরস্থান প্রতিষ্ঠা করেন। এখন রাস্তা না থাকলে এই প্রতিষ্ঠান চালানোই অসম্ভব হয়ে পড়বে।

তিনি জানান, যিনি ঘর তুলে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন, সেই জায়গাটি মূলত সরকারের খাসজমি, যা বন্দোবস্ত পেয়েছেন আব্দুল কুদ্দুছ নামের এক ব্যক্তি। কুদ্দুছ মাদ্রাসার জন্য রাস্তা দিতে সম্মত, কিন্তু তিনি এলাকায় কম থাকেন। এই সুযোগে তার জমি জোর করে দখল করে ফেলেছেন আব্দুল কাদির ও তার ভাই আব্দুস ছাত্তার। পাশে তাদের বাবা আব্দুস সোবহানেরও একটি প্লট আছে। যা ভূমিহীন হিসাবে তাকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে কাদির ও ছাত্তার জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে এই জায়গায় বসবাস করছেন এবং জমি নিয়ে কুদ্দুছের সঙ্গে তাদের মামলা চলছে। কাজেই মাদ্রাসাকে রাস্তা দেওয়ার মতো জমি তাদের হাতে নেই।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিছুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিন তদন্ত করেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর তিনি ইউএনও এবং সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, মাদ্রাসার জন্য একটি রাস্তা অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে যার নামে ভূমিহীন বন্দোবস্ত রয়েছে, তা বাতিল করার সুপারিশও করেন তিনি।

এ বিষয়ে তাড়াইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে মোছা. পপি খাতুন বলেন, “প্রতিবেদনসহ পুরো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সবপক্ষকে সন্তুষ্ট করে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/রুমন/মেহেদী

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়