ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নিষেধাজ্ঞায় বেকার বরগুনার লক্ষাধিক মৎস্যজীবী

বরগুনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৪, ৫ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ১০:৫৫, ৫ অক্টোবর ২০২৫
নিষেধাজ্ঞায় বেকার বরগুনার লক্ষাধিক মৎস্যজীবী

ইলিশ ধরা ট্রলারগুলোকে ঘাটে ভিড়িয়ে রাখা হয়েছে

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত নদী ও সাগরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। এই সময়ে বেকার হয়ে পড়েছেন জেলার লক্ষাধিক জেলেসহ মৎস্যজীবীরা। 

জেলেদের দাবি, নিষেধাজ্ঞায় সরকারি সহায়তার চাল নিয়ে নয়ছয় বন্ধে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

নিষেধাজ্ঞার এক দিন আগে থেকেই বরগুনার পাথরঘাটার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও তালতলীর ফকিরহাট এলাকায় নোঙর করেছে কয়েক হাজার ট্রলার।

নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন এই ২২ দিন ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। তাই আইন মেনে জাল দড়ি গুছিয়ে বাড়ি ফিরেছেন উপকূলের জেলেরা। তবে ২২ দিন বেকার সময়ে আয়ের পথ বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন তারা। 

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, জাল-দড়ি গুছিয়ে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এফবি সৈকত সম্রাট ট্রলারের মাঝি সোবাহান হাওলাদার। 

তিনি বলেন, ‘ইলিশের ভরা মৌসুমে ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞা গলার কাঁটা হয়েছে। কিছুদিন আগে মাছ শিকারে ৬১ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিল। সেই সময়ের দেনা পরিশোধ করার আগেই ২২ দিনের মা ইলিশ সংরক্ষণের নিষেধাজ্ঞা শুরু। দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছি। তারপরেও সরকারের আইন না মেনে উপায় নেই।” 

অন্যান্য জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞায় বেকার হয়ে পড়েছেন তারা। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সহায়তার চাল বিতরণের দাবিও জানান তারা। 

এফবি সাদিয়া ট্রলারের জেলে ফোরকান মিয়া বলেন, “দেশের পট পরিবর্তনের পরে নানামুখী সংস্কার মুখে শুনলেও বন্ধ হয়নি জেলেদের ভাগের চাল চুরির চর্চা। জেলে প্রতি ২৫ কেজি করে সহায়তার চালের পুরোটাই চাই আমরা। প্রতিটি জেলে পরিবারে কমপক্ষে পাঁচ জন সদস্য আছে। ২৫ কেজি চালে সবটা না চললেও আমরা দুমুঠো খেতে পারি।”

তিনি বলেন, “গতবছর মা ইলিশ সংরক্ষণ অবরোধের সহায়তার চাল নিয়ে নয় ছয় করেছে দায়িত্বরতরা। ২৫ কেজি চাল দেওয়ার কথা থাকলেও জেলেদের চাল দেওয়া হয়েছে ১৫ থেকে ১৮ কেজি। বাকি চাল চুরি করেছে জনপ্রতিনিধিরা।”

জেলে সগির, হিরন, শামসু, হাসানসহ একাধিক জেলে বলেন, চাল বিতরণের সময় নৌবাহিনীর উপস্থিতি থাকলে সহায়তার চাল পুরোটাই পাবেন তারা। 

এসব বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন রাইজিংবিডিকে বলেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের পাশাপাশি জেলে ও মৎস্য শ্রমিকদের সহায়তার চাল সঠিক বণ্টনে বদ্ধ পরিকর প্রশাসন। এরইমধ্যে জেলা প্রশাসক ও নৌবাহিনীর সাথে কথা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে তারা কঠোর থাকবেন। অন্যদিকে চাল বিতরণে অনিয়ম ঠেকাতেও কাজ করবে যৌথবাহিনীর সদস্যরা।”

গত বছরের নিষেধাজ্ঞায় প্রায় ৫৩ শতাংশ মা ইলিশ নিরাপদে ডিম ছাড়তে পেরেছিল। এর ফলে ৪৪ দশমিক ২৫ হাজার কোটি জাটকা যুক্ত হয়েছে নদী ও সাগরে।

ঢাকা/ইমরান/এস

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়