ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

গয়না হাতিয়ে নিতে দাদিকে হত্যা করেন নাতনি: পুলিশ

নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ১০ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ০৯:৫৪, ১০ অক্টোবর ২০২৫
গয়না হাতিয়ে নিতে দাদিকে হত্যা করেন নাতনি: পুলিশ

দাদিকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার ফাউজিয়া খাতুন

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা মমতাজ বেগমকে (৬৯) হত্যার দায় স্বীকার করেছেন নাতনি ফাউজিয়া খাতুন (১৯)। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিতে দাদিকে হত্যা করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের (সুমন) কাছে জবানবন্দি দেন ফাউজিয়া। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। 

আরো পড়ুন:

বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত রবিবার রাতে বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌর এলাকার সর্দারপাড়ার নিজ বাড়িতে প্রয়াত প্রকৌশলী এস এম শফিউল্লাহর স্ত্রী মমতাজ বেগমের মরদেহ পাওয়া যায়। তার মুখমণ্ডলে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরদিন নিহতের ছেলে জাকির হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ঘটনার দিন রাতেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে বৃদ্ধার ভাশুরের নাতনি ফাউজিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি বনপাড়ার সর্দারপাড়ার শাহিনুজ্জামানের মেয়ে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পরপরই খুনিকে শনাক্ত করতে মাঠে নামে পুলিশ। তারা ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জানতে পারে, ঘটনার সময় নিহত বৃদ্ধার বাড়িতে তার ভাশুরের নাতনি ফাউজিয়া প্রবেশ করেছিলেন। তাৎক্ষণিকভাবে তারা বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে গোয়েন্দা নিয়োগ করে। নাটোর শহরের হরিশপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে রবিবার রাতেই ফাউজিয়া ও তার স্বামী মিনারুলকে আটক করা হয়। চার দিনের জিজ্ঞাসাবাদে ফাউজিয়া স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়ার জন্য দাদিকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে কিছু গয়না জব্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফাউজিয়াকে নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের সামনে হাজির করেন। এসময় ফাউজিয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। বিচারক তাকে জবানবন্দি দিতে তিন ঘণ্টা সময় দেন। বিকেল সাড়ে ৫টায় বিচারক নিজের খাসকামরায় অভিযুক্তের জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

ফাউজিয়ার দেওয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে ওসি গোলাম সারওয়ার বলেন, বাড়ির প্রহরী এশার নামাজ পড়তে মসজিদে গেলে ফাউজিয়া তাঁর দাদির শোবার ঘরে ঢোকেন। এ সময় ফাউজিয়া সেখানে স্বামীকে নিয়ে রাত্রিযাপন করতে চান। মমতাজ বেগম রাজি হননি। তখন ফাউজিয়া তার হাতে থাকা টর্চলাইট দিয়ে মমতাজ বেগমের মুখমণ্ডলে আঘাত করেন। এতে তিনি লুটিয়ে পড়েন এবং তার নাক ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। তখন ফাউজিয়া দাদির শরীরে থাকা সাড়ে তিন ভরি স্বর্ণালংকার খুলে নাটোরে চলে যান। 

তিনি আরো জানান, নাটোরের একটি দোকানে ফাউজিয়া গয়না বিক্রি করে নতুন জামাকাপড় কেনেন এবং বাসে ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

ঢাকা/আরিফুল/মাসুদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়