ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি-নবজাতকের মৃত্যু, ক্লিনিকে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫৭, ১৮ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ২০:১৪, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি-নবজাতকের মৃত্যু, ক্লিনিকে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় প্রসূতি পারভীন আক্তার পারুল বেগম (২৫) ও নবজাতকের মৃত্যু ভুল চিকিৎসায় হওয়ার অভিযোগে ক্লিনিকে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। 

শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে পলাশবাড়ী পৌর শহরের মা ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমে হামলা করা হয়। সেনা সদস্য, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

আরো পড়ুন:

রোগীর স্বজনরা জানান, শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পারুলকে মা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। রাত ১১ টার দিকে তার সিজারিয়ান অপারেশন শুরু করে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। কয়েক ঘণ্টা চেষ্টা করেও তারা সন্তান প্রসব করাতে পারেনি। একপর্যায়ে ভোর ৪টার দিকে প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু হয়। প্রসূতি মৃত্যুর বিষয়টি গোপন করে কৌশলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্স ডেকে রোগীকে রংপুরে সরকারি হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টা করলে রোগীর স্বজনরা বিষয়টি বুঝতে পারে। ক্লিনিকে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী। খবর পেয়ে সেনা সদস্য, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করে। পরে রোগীর স্বজনরা লাশ বিশ্রামগাছী গ্রামে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে যায়। 

রোগীর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, পারুলের এর আগে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে দুটি সন্তান জন্ম হয়েছে। এবার ভুল চিকিৎসার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত চিকিৎসক ও নার্স ফাতেমা বেগমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ক্লিনিক বন্ধের দাবি করেন তারা। 

নিহত পারুল গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌর শহরের জামালপুর গ্রামের বাদশা মিয়ার মেয়ে এবং উপজেলা মহদীপুর ইউনিয়নের বিশ্রামগাছী গ্রামের শামীম মিয়ার স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের জননী।  

ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে একাধিক মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলেও কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে জানিয়ে পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জুলফিকার আলী ভুট্রু বলেন, ‘‘এখনো পর্যন্ত নিহতের পরিবার থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’  

গাইবান্ধা সিভিল সার্জন ডা. রফিকউজ্জামান বলেন, ‘‘এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগেও এমন ঘটনার প্রেক্ষিতে দেড় মাস ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘চিকিৎসক বা এনেস্থিসিয়া চিকিৎসকের অবহেলার কারণে মৃত্যু হতে পারে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফাতেমা বেগমের মালিকানাধীন ‘মা ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমে’ একের পর এক প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। 

ঢাকা/মাসুম/বকুল

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়