ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

৩১ বছরের পুরানো সেতু এখন গলার কাঁটা

নরসিংদী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৬, ২৮ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ১০:৪১, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
৩১ বছরের পুরানো সেতু এখন গলার কাঁটা

নরসিংদী সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়নের বালুয়াঘাট বাজারের সেতুটি সংস্কার না হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে

নরসিংদী সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়নের বালুয়াঘাট বাজারের পুরানো সেতুটি এখন এলাকাবাসীর গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। ১৯৯৪ সালে নির্মাণের পর থেকে সংস্কার না হওয়ায় সেতুটির রেলিং ভেঙে গেছে, রড বেরিয়ে পড়েছে, লোহার অংশে মরিচা ধরেছে। প্রতিবার যানবাহন উঠলে কেঁপে ওঠে গোটা কাঠামো। খালের পানির স্রোতে মাটি সরে গিয়ে সেতুর পিলারগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। 

এলাকাবাসী জানান, নজরপুর, করিমপুর, আলোকবালি ও চরদিঘলদী ইউনিয়নের মানুষ এই সেতুর ওপর নির্ভরশীল। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় ৩১ বছর আগে নির্মিত এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে রিকশা ও অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। বর্তমানে তাদের কাছে এই সেতু ভয় ও আতঙ্কের নাম।

আরো পড়ুন:

স্থানীয় বাসিন্দা মো. জব্বার মিয়া বলেন, “সেতু দিয়ে পার হওয়ার সময় বুধ ধড়ফড় করে। মনে হয়, কখন জানি নিচে পড়ে যাই। প্রতিদিন সকাল-বিকেল এই ভয় নিয়েই কাজে যেতে হয়।” 

অটোরিকশা চালক সোহেল মোল্লা বলেন, “একটা রিকশা উঠলেই সেতু কাঁপতে শুরু করে। যাত্রীরা ভয় পান, কেউ কেউ মাঝপথে নেমে যান। উপায় কী? এই রাস্তা ছাড়া তো কিছুই নেই।” 

দোকানি রোকন উদ্দিন বলেন, “প্রতিদিন এই সেতুর ওপর দিয়ে অন্তত দুই থেকে তিন হাজার মানুষ চলাচল করেন। স্কুলের শিশুরা ভয়ে কান্না করে, চালকরা খুবই ধীর গতিতে গাড়ি চালান। সেতুটির রেলিংও ভেঙে গেছে।” 

ঝঁকিপূর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে অটোরিকশা


তিনি বলেন, “প্রশাসনের লোকজন আসেন, ছবি তোলেন, কথা বলেন এরপর চলে যান। গত পাঁচ বছর ধরে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হেলেও তারা কিছুই করেননি। এই সেতু ভেঙে গেলে আমরা একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাব। রাতের বেলায় সেতু পার হওয়া যেন এক দুঃসাহসিক অভিযান।” 

নজরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুর রহিম বলেন, “আমরা তো সরকারকে ট্যাক্স দেই, ভোট দেই। একটা সেতু ঠিক করার মতো কেউ নেই? দুর্ঘটনা ঘটলে তখন সবাই দৌঁড়াবে, কিন্তু আগে কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না? সেতুর বিষয়ে বারবার স্থানীয় প্রশাসন ও প্রকৌশল দপ্তরে আবেদন জানানো হয়েছে। এখনো মেরামতের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।” 

নরসিংদী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজা-ই-রাব্বী বলেন, “আমরা সেতুর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা সম্পর্কে অবগত। ইতোমধ্যে সেতুটি নতুনভাবে নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। অনুমোদন পেলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। এই সেতু চারটি ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থার মূলধারা। আমাদের অগ্রাধিকার তালিকায় এই প্রকল্পটি রাখা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করা হবে।” 

ঢাকা/হৃদয়/মাসুদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়