ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

পাবনায় রেজিস্ট্রারদের প্রাণনাশের হুমকি-হামলার অভিযোগ, ৬ দলিল লেখকের সনদ বাতিল

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৬, ২৫ নভেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৩:৩৭, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
পাবনায় রেজিস্ট্রারদের প্রাণনাশের হুমকি-হামলার অভিযোগ, ৬ দলিল লেখকের সনদ বাতিল

পাবনা জেলা রেজিস্ট্রার ও সাব-রেজিস্ট্রারদের কার্যালয়ে হামলা, প্রাণনাশের হুমকি, মামলা প্রত্যারের আল্টিমেটাম, চাঁদাবাজি, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাঞ্ছিত করাসহ নানা অভিযোগে পাবনা সদর সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তালিকাভুক্ত ছয় জন দলিল লেখকের সনদ বাতিল করা হয়েছে। সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তাদেরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা রেজিস্ট্রার দ্বীপক কুমার সরকার। এর আগে রবিবার (২৩ নভেম্বর) দ্বীপক কুমার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাদের সনদ বাতিল ও অফিস আঙ্গিনায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত দলিল লেখকরা হলেন— পাবনা সদর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ইসহাক উল আলম, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম শাহীন, সদস্য আব্দুস সালাম, মোস্তাফিজুর রহমান মানিক, হাসান মাহমুদ পাপ্পু ও গোলজার হোসেন। 

এ বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার দ্বীপক কুমার সরকার বলেছেন, হত্যার হুমকি ও অশালীন আচরণসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত উল্লিখিত দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছিলেন সদর উপজেলার সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী। সেই অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া যায়। সম্প্রতি সেই অভিযোগসহ দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় অভিযুক্তরা। এছাড়াও একাধিক সময়ে তাদের বিরুদ্ধে অফিসে হামলা, প্রাণনাশের হুমকি, মামলা প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম, অফিসে আতঙ্ক সৃষ্টি, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাঞ্ছিত করা, চাঁদা আদায়সহ নানা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই ৬ জন ছাড়াও যারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দলিল লেখকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নুরুল আলম শাহীন আওয়ামী লীগের সময় নিজেকে শ্রমিক লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে পাবনা সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে আধিপত্য গড়ে তোলেন। জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতার ছত্রছায়ায় সেখানে চাঁদাবাজি‌র স্বর্গরাজ্য গড়ে তোলেন। ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে তিনি নিজেকে বিএনপিপন্থী পরিচয় দিয়ে কয়েকজন নেতার ছত্রছায়ায় এই স্বর্গরাজ্য ধরে রেখেছেন। প্রতিদিন সেখানে ৪ থেকে ৫০০ দলিল সম্পাদন হয়। দলিল প্রতি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করেন তিনি। সেই হিসেবে প্রতিদিন ১০-১৫ লাখ টাকা চাঁদা তুলে ভাগবাটোয়ারা করা হয়।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও ফোন বন্ধ থাকায় নুরুল আলম শাহীনের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

পাবনা সদর উপজেলার দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ইসহাক উল আলম বলেছেন, “আমরা শুধু চিঠি পেলাম যে, আমাদের সনদ বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু, কেন করা হয়েছে, তা আমরা জানি না। আমাদের এর আগে কোনো নোটিশও দেয়নি। এখন মিথ্যা মামলা দিলে আমাদের কী বলার আছে?”

ঢাকা/শাহীন/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়