রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে হত্যা
রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের উত্তর রহিমাপুর এলাকায় এক মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহতরা হলেন—যোগেশ চন্দ্র রায় (৭৫) ও সুর্বণা রায় (৬০)।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে নিজ বাড়িতেই হত্যার শিকার হন তারা। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে মই বেয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেন। চাবি দিয়ে দরজা খুলে বাড়ির ভেতরে ঢোকার পর ডাইনিং রুমে যোগেশ চন্দ্র রায় এবং রান্নাঘরে সুর্বণা রায়ের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন তারা। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী দীপক চন্দ্র রায় জানিয়েছেন, তার পরিবারের সদস্যরা ৪০-৫০ বছর ধরে যোগেশ চন্দ্র রায়ের বাড়ি দেখাশোনা করেন। তিনি প্রতিদিন সকালে কাজ করতে সেখানে যান। আজ সকাল ৭টা পর্যন্ত ঘর থেকে কেউ বের না হওয়ায় সন্দেহ হয়।
তিনি বলেন, “ডাকাডাকি করেও কোনো শব্দ না পেয়ে আশপাশের লোকজনকে ডাকি। এরপর মই বেয়ে ভেতরে ঢুকে দেখি, ঘরে কেউ নেই। পরে ডাইনিং রুমের দরজা খুলে দেখি দাদুর রক্তাক্ত লাশ আর রান্নাঘরে দিদার লাশ পড়ে আছে।"
স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, যোগেশ চন্দ্র রায় শিক্ষক ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ থেকে অবসরে যান। তাদের দুই ছেলে সন্তান আছে। বড় ছেলে শোভেন চন্দ্র রায় জয়পুরহাটে এবং ছোট ছেলে রাজেশ খান্না চন্দ্র রায় ঢাকায় পুলিশে চাকরি করেন। গ্রামের বাড়িতে থাকতেন যোগেশ চন্দ্র রায় ও তার স্ত্রী।
রবিবার সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষ জমায়েত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোনাব্বর হোসেন এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন ঘটনাস্থলে এসেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন বলেছেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
তারাগঞ্জ থানার এসআই মো. আবু ছাইয়ুম বলেছেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুজনেরই মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/আমিরুল/রফিক