নাটোরে ভিড় বেড়েছে পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানে
নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
সন্তানের জন্য শীতের পুরাতন কাপড় কিনছেন এক মা
কয়েকদিন ধরেই বাড়ছে শীতের তীব্রতা। কাঠখড়ে আগুন ধরিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন ছিন্নমূল মানুষ। শীত বাড়ায় নাটোরের পুরাতন গরম কাপড়ের অস্থায়ী দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে ক্রেতাদের। সামর্থ্য ও পছন্দ অনুযায়ী মধ্যবিক্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষ কেনার চেষ্টা করছেন পোশাক।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের মসজিদ মার্কেট, মাদ্ররাসা মোড়, স্টেশন এলাকার সড়কের দু পাশে অস্থায়ী পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলো বসেছে। কমদামে পুরাতন গরম কাপড় কিনতে নিম্নবিত্ত মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বিক্রেতাদের হাকঁডাকে মুখরিত ছিল চারপাশ।
বিক্রেতারা জানান, সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা মূল্যে মিলছে শীতের পোশাক। এখানে জ্যাকেট ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়, সোয়েটার-জাম্পার ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়, গেঞ্জি-প্যান্ট ৫০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী দেখে নিয়ে পোশাক কিনছেন।
পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ীরা বলছেন, পৌষ-মাঘ এই দুমাস বেচাকেনা জমে ওঠে। শীতের ওপর বেচাকেনা নির্ভর করে। শীত যত বাড়ে, কাপড় বিক্রি তত বেড়ে যায়। এ বছর পুরাতন কাপড়ের দাম কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
পুরাতন কাপড় কিনতে আসা আক্কাস আলী বলেন, “কয়েক দিন ধরে শীত অনুভূত হচ্ছে। স্ত্রী ও সন্তানদের জন্য পুরাতন কাপড় কিনতে এসেছি।”
তিনি বলেন, “নতুন কাপড় কেনার সামর্থ্য নেই। আমাদের মতো মধ্যবিক্ত পরিবারের জন্য এখানে কম দামে ভালো কাপড় পাওয়া যায়। ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় শীতের পুরাতন কাপড় মিলছে। আমি নিজের এবং স্ত্রী-সন্তানের জন্য কাপড় কিনেছি।”
নাসিম উদ্দিন নামে এক ক্রেতা বলেন, “১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে ভালো সোয়েটার পাওয়া যায়। মধ্যবিত্তদের অনেক উপকার হয়। আমরা অল্প টাকা দিয়ে শীতের পোশাক কিনে শীত নিবারণ করতে পারি। বেছে দেখে কিনতে পারলে অনেক ভালো মানের কাপড় পাওয়া যায়।”
তিনি বলেন, “ছেলের জন্য ২৫০ টাকায় জ্যাকেট নিয়েছি। এই জ্যাকেট মার্কেটে কিনতে গেলে ১৫০০ থেকে ২০০০ হাজার টাকা দাম নিতো। পুরাতন দোকানে অনেক কমে পাওয়া যায়।”
মোছা. ফারজানা আক্তার ও শিখা বোস নামে দুই ক্রেতা জানান, অস্থায়ী দোকানে ছেলে-মেয়েদের সুন্দর পোশাক পাওয়া যায়। কমদামে অনেক ভালো মানের পোশাক পাওয়া যায়।
পুরাতন কাপড় বিক্রেতা সজীব রহমান বলেন, “শীত পড়তেই হঠাৎ করে ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। নতুন কাপড়ের দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ পুরাতন কাপড়ের দিকেই ঝুঁকছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। বিশেষ করে জ্যাকেট, সোয়েটার ও কম্বলের চাহিদা বেশি।”
অপর বিক্রেতা আব্দুল মজিদ বলেন, “শীত বেশি হওয়ায় বিক্রি আগের তুলনায় ভালো। নিম্নআয়ের মানুষ ছাড়াও মধ্যবিত্ত অনেকেই এখানে কাপড় কিনতে আসছেন। কম দামে শীতের পোশাক পাওয়া যায় বলেই ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে।”
ঢাকা/আরিফুল/মাসুদ