দ্রুত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালুর দাবি বাকৃবি শিক্ষার্থীদের
বাকৃবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়ে এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা দ্রুত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালুর দাবিও জানান।
এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ জানান। এছাড়া ‘প্রশাসনের কালক্ষেপণ, মানি না মানব না’, ‘প্রশাসনের কালো হাত, ভেঙে দাওয়া গুড়িয়ে দাও’, ‘বহিরাহতের হামলার, বিচার চাই, বিচার চাই’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শিবলী সাদী বলেন, “প্রশাসনের অভিযোগ ছিল, আমরা তাদের সহযোগিতা করছি না। তাদের দাবি ছিল, একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মেনে নিলে সিন্ডিকেট সভাসহ বাকি প্রক্রিয়া আগাবে। আমরা গত ৮ সেপ্টেম্বর ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা স্যারের সঙ্গে আলোচনার সময় কিছু শর্ত সাপেক্ষে কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। আমরা প্রশাসনকে কয়েকটি প্রস্তাবনা দিয়েছি।”
তিনি বলেন, “কিন্তু কথা ছিল ৮ সেপ্টেম্বর রাতের মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের সিদ্ধান্ত জানানো হবে। কবে সিন্ডিকেট মিটিং হবে, টেকনিক্যাল বিষয় কিভাবে আগাবে এসব জানানোর কথা ছিল। কিন্তু তিনদিন অতিবাহিত হলেও প্রশাসন থেকে কোনো সহযোগিতা পায়নি। ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আলোচন চলছে এখনো সম্পূর্ণ সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। আমরা জানি না, কি কারণে প্রশাসন সিদ্ধান্তহীনতায় আছেন। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশন জটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।”
পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এহসানুল হক হিমেল বলেন, “প্রশাসনের সঙ্গে চলমান সংকট উত্তরণে আমরা কয়েক দফা বৈঠক করেছি। সর্বশেষ গত ৮ সেপ্টেম্বরে ছয়টি প্রস্তাবনা দিয়েছি প্রশাসনকে। প্রস্তাবনার ২ নম্বর ও ৬ নম্বর দাবি মানার সাপেক্ষে আমরা কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবি মেনে নিয়েছি। প্রশাসন আমাদের জানায় একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত না মানলে সিন্ডিকেট মিটিং হবে না।”
তিনি বলেন, “অন্য অনুষদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে, আমরা কেন বহিরাগতদের বিষয়ে কথা বলছি না কেনো। আমাদের দেওয়া প্রস্তাবনায় ২ নম্বর এ আছে বহিরাগতদের বিচারকার্য দৃশ্যমান করতে, বহিরাগতদের অবাধ বিচরণ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিটি প্রবেশ পথে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু তিনদিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও প্রশাসন থেকে কোনো বার্তা আমাদের নিকট আসেনি।”
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শহিদুল হক বলেন, “শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে আলোচনা চলছে। তদন্ত কমিটিসহ বেশ কয়েকটি কমিটির সুপারিশের অপেক্ষায় আছি। খুব দ্রুতই প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”
গত ৩১ আগস্ট কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলায় শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ ১৫ আহত হন। এ ঘটনার পর বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল পরবর্তী উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রাত সাড়ে ৯টায় অনলাইনে জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে তা প্রত্যাখান করেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/লিখন/মেহেদী