ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সংঘর্ষে উস্কানিদাতা উদয় কুসুমের বিরুদ্ধে মামলা করেনি চবি প্রশাসন

চবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০১, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫  
সংঘর্ষে উস্কানিদাতা উদয় কুসুমের বিরুদ্ধে মামলা করেনি চবি প্রশাসন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় ৯৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১ হাজার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তবে এ সংঘর্ষে সরাসরি উস্কানিদাতা, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা উদয় কুসুম বড়ুয়ার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

এদিকে, সংঘর্ষের দিন (৩১ আগস্ট) উদয় কুসুম বড়ুয়ার উস্কানিমূলক ভিডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ে। একইদিনে তাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ দলের নির্দেশনা অমান্য করে সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য উদয় কুসুম বড়ুয়াকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, উদয় কুসুম শিক্ষার্থীদের উপর হামলার জন্য স্থানীয়দের উস্কে দিয়েছিল। সেই ভিডিও বক্তব্য ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু চবি প্রশাসনের দায়ের করা মামলার এজাহারে তার নাম নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সৃজন বড়ুয়া বলেন, “মামলার এজাহারে উদয় কুসুম বড়ুয়ার নাম নেই কেন? অথচ এই লোকটিই গ্রামবাসীদের ছাত্রদের ওপর হামলার জন্য উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছে। যার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন এই ব্যক্তির নামে মামলা করল না?”

২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম বলেন, “সে স্থানীয় হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং হামলা উস্কে দিয়েছে। একটি দলের কেন্দ্রীয় নেতা হয়েও তার এমন উস্কানিমূলক বক্তব্য কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। তার এ বক্তব্য শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় সরাসরি প্রভাব রেখেছিল। সারা দেশব্যাপী তাকে নিন্দা জানায়।”

তিনি বলেন, “সংঘর্ষের দিনই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দায়ের করা মামলার এজাহারে তার নাম না থাকায় আমরা বিস্মিত হয়েছি। অতিদ্রুত তার নামে মামলা দায়ের করে আইনের আওতায় আনা হোক।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, “শিক্ষার্থীদের ওপর যারা হামলা করেছে, তাদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরো ১ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। তিনি (উদয় কুসুম) অজ্ঞাতনামায় আসতে পারেন। তবে আলোচনার মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা করাও হতে পারে।”

গত রবিবার (৩১ আগস্ট) সংঘর্ষের দিন বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ২ নম্বর গেট বাজারে ওই বক্তব্যে তিনি বলেন, “উচ্ছৃঙ্খল ছেলেরা ভিসিকেও মানে না। অনতিবিলম্বে এই কুলাঙ্গার ছেলেদের, যারা আমাদের ওপর হামলা করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেফতার করতে না পারলে আমরা জোবরার সমস্ত জনগণ বিশ্ববিদ্যালয় ঘেরাও করবো। এর জন্য জীবন দিতে হলে জীবন দেব। আমার এলাকার সম্মানের চেয়ে আমার জীবন বড় নয়।”

তিনি বলেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ সমস্যার সমাধান না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলন, রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করব। সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠে না। কোনো অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আপোষ বা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান পাওয়া যাবে না।”

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়